
ফাইল ছবি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদকে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। নতুন আইনের খসড়া অনুযায়ী, তাদের পরিচয় হবে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন সংশোধনের চূড়ান্ত খসড়া অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে শুধু রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা ব্যক্তিদেরই বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজনীতিবিদ, প্রবাসী সংগঠক, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীসহ চারটি শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধাকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নতুন পরিচয় দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, "যারা সরাসরি যুদ্ধ করেছেন, তারাই মুক্তিযোদ্ধা থাকবেন। অন্যদের মর্যাদাহানি হচ্ছে না, শুধু পরিচয় বদলানো হচ্ছে।"
তবে এই পরিবর্তন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইতিহাসবিদ ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী রাজনীতিবিদদের ভূমিকা অস্বীকার করা ঠিক হবে না। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মন্তব্য করেন, "কোনো আইন বদলে কারও অবদান মুছে ফেলা যায় না। এটি অপ্রয়োজনীয় ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত।"
একই মত পোষণ করে মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল বলেন, "মুক্তিযুদ্ধ শুধু সামরিক লড়াই ছিল না, এটি ছিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সংগ্রামও। মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় বদলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।"
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় পরিবর্তনের ফলে প্রায় ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় বদলে যাবে বলে জানা গেছে। খসড়াটি ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং শিগগিরই এটি অধ্যাদেশ হিসেবে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ