
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার ইসরাইলি পরিকল্পনা আটকে দিয়েছিলেন বলে দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইল খামেনিকে টার্গেট করে একটি সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছিল। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ এবং হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মাধ্যমে খবরটি ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে আসে। তবে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি হস্তক্ষেপ করে এ পরিকল্পনা বাতিল করতে বলেন।
একজন মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, “ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকান হত্যা করেছে? না। যতক্ষণ না তারা সরাসরি কোনো মার্কিন নাগরিককে হত্যা করছে, ততক্ষণ আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যা করার বিষয়ে এমনকি আলোচনাও করবো না।”
এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সঙ্গে সামরিক উত্তেজনার বিস্তার চায়নি। বিশেষ করে যখন সেটি কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছে।
এ বিষয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কৌশলী ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। ফক্স নিউজের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান “স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার”-এ অংশ নিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, “এমন অনেক বিষয় নিয়েই খবর প্রকাশ হয়, যেগুলো কখনো আলোচনাই হয়নি। আমি সে বিষয়ে কিছু বলবো না।”
তবে তাঁর বক্তব্যের এই অংশে স্পষ্টতই বার্তা দেওয়া হয় যে ইসরাইল সম্ভাব্য হামলার বিষয়গুলো গোপনে রাখে এবং প্রয়োজন হলে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। তাঁর ভাষায়, “আমরা যা করার দরকার, তা করি।”
নেতানিয়াহু আরও বলেন, ইরানে একটি সম্ভাব্য সামরিক হামলার পরিণতিতে সরকার পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তাঁর মতে, ইরান শুধু ইসরাইলের নয়, বরং গোটা অঞ্চলের জন্য একটি ‘অস্তিত্বের হুমকি’। এই হুমকি দূর করতে যা যা প্রয়োজন তা-ই ইসরাইল করবে।
এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, তা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও মনে করেন, এই সংকট সহজেই সমাধান করা সম্ভব। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করেছেন, যদি ইরান কোনো মার্কিন স্থাপনায় বা নাগরিকের ওপর হামলা করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত থাকবে।
ট্রাম্পের এই বার্তা কূটনৈতিক মহলে গুরুত্বপূর্ণ একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে—তিনি সরাসরি যুদ্ধ চান না, তবে ‘প্রতিরোধ’-এ কড়াকড়ি ছাড়তে রাজি নন। আর খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তার সেই কৌশলগত ভারসাম্যেরই অংশ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ