
ছবি: সংগৃহীত
দেশজুড়ে কয়েকদিন ধরে চলা অস্বস্তিকর তাপপ্রবাহ অবশেষে স্তিমিত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় এবং বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের বর্ধিতাংশ সক্রিয় থাকার কারণে টানা পাঁচ দিন ধরে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, কোথাও কোথাও অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিরাজ করছে। এর ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা মাঝারি মাত্রায় অবস্থান করছে। এ ধরনের বায়ুপ্রবাহ সাধারণত টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং কখনো কখনো তা অতি ভারি বর্ষণেও রূপ নেয়।
দিনভিত্তিক পূর্বাভাস: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে?
সোমবার (১৬ জুন):
খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগে অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এই দিন থেকেই দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে শুরু করবে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন):
ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বিদ্যুৎ চমকানো, দমকা হাওয়া এবং অবিরাম বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রা আরও ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমতে পারে।
বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (১৮-২০ জুন):
তিনদিনই দেশের আটটি বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় একই ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণও ঘটতে পারে। তবে, এসব দিনে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাপমাত্রার হার কমলেও হতে পারে জলাবদ্ধতা, ধসের আশঙ্কা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই বৃষ্টির ফলে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে কমে এসে ৩২-৩৩ ডিগ্রি ঘরে থাকতে পারে। বিশেষ করে ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় হলেও, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলিতে দিনভর মেঘলা আকাশ এবং বৃষ্টি থাকার কারণে স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।
তবে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবানসহ পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। একইভাবে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে দীর্ঘ সময় ভারি বৃষ্টি হলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
পরামর্শ ও সতর্কতা
আবহাওয়া অফিস ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় নাগরিকদের—
পাহাড়ি অঞ্চলে সতর্ক থাকার,
জলাবদ্ধ এলাকায় বের না হওয়ার,
শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার,
বজ্রপাতের সময় খোলা স্থানে আশ্রয় না নেওয়ার
পরামর্শ দিয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ