
ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচনকে ঘিরে চলমান প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। রোববার (১৫ জুন) ঈদ-পরবর্তী প্রথম কার্যদিবসে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় তিনি এ কথা জানান।
সিইসি বলেন, "নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। এখন যতটুকু বাকি রয়েছে, সেটা আমাদের সম্মিলিতভাবে সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচন একটি জাতীয় দায়িত্ব। এটা শুধু ইসির একার দায়িত্ব নয়—এটা গোটা দেশের অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া। তাই আমরা সবাই মিলে এই কাজ সম্পন্ন করবো।"
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন অঙ্গীকারবদ্ধ—এমন বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “আজকের দিনে আমাদের সবার শপথ হওয়া উচিত, আমরা কোনো দলের প্রতি পক্ষপাত দেখাব না। কারও লেজুড়বৃত্তি করব না। আমাদের কাজ হবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। আমাদের দায়িত্ব জনগণের রায়ের প্রতিফলন নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধান ও আইন আমাদের যে স্বাধীনতা দিয়েছে, তা বিবেক দিয়ে কাজে লাগাতে হবে। কেউ যদি খেলে, খেলুক। জেতে হলে তারা জিতুক। কিন্তু আমরাই সেই রেফারি যারা নিশ্চিত করবো যেন খেলার মাঠটা সবার জন্য সমান থাকে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বারবার এ কথা জোর দিয়ে বলেন যে, কমিশনের ভূমিকা হবে রেফারির মতো। “আমরা খেলোয়াড় না। আমরা রেফারি। যারা খেলবে, তারা খেলুক। কেউ যদি জেতে, তারা জিতুক। কিন্তু আমরা এমন একটা মাঠ তৈরি করবো, যেখানে কেউ বলতে পারবে না যে তাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।”
এই প্রেক্ষিতে তিনি সব নির্বাচন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে সততা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানান। “আমরা যেন এমনভাবে কাজ করি, যাতে আগামী দিনে কেউ আমাদের ওপর আঙুল তুলতে না পারে। নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা আমাদের কর্তব্য।”
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মধ্যেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের সব প্রস্তুতি ও কর্মপন্থা এখন আলোচনা ও বিশ্লেষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্য সেই প্রস্তুতির দিকনির্দেশনাই তুলে ধরেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিইসির বক্তব্যে নির্বাচনের প্রতি কমিশনের দায়বদ্ধতা ও নিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতি আবারও প্রতিফলিত হলো। এর মাধ্যমে তিনি নির্বাচন-সংক্রান্ত সকল মহলের কাছে একটি শক্ত বার্তা দিতে চেয়েছেন—এই নির্বাচন হবে জনগণের, প্রতিযোগিতামূলক এবং ন্যায্য।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন সব রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী এবং সাধারণ জনগণের কাছে আহ্বান জানান, যেন সবাই নির্বাচন কমিশনের এই নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল অবস্থানকে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, “আমরা একা পারবো না। এটা জাতির সম্মিলিত দায়িত্ব। তাই আপনাদের সবাইকে এই দায়িত্ব পালনে পাশে চাই।”
এভাবেই এক ঈদের সকালে তিনি উচ্চারণ করলেন একটি দেশের নির্বাচনী ভবিষ্যতের দৃঢ় সংকল্প।
বাংলাবার্তা/এমএইচ