
ছবি: সংগৃহীত
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নতুন অগ্রগতি ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা দলগুলোর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ অন্তত ১৬টি রাজনৈতিক দল প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রাথমিক যাচাইয়ের ধাপ পেরোলেও এখনই তাদের নিবন্ধন নিশ্চিত নয়—মাঠ পর্যায়ে তদন্ত ও তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে ইসি।
ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানান, যেসব দল প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে গেছে, তাদের সব তথ্য এখন মাঠ পর্যায়ে যাচাই করা হবে। মাঠ পর্যায়ের এই যাচাই-বাছাইয়ে যদি দেখা যায়, তারা সব শর্ত পূরণ করেছে, তাহলেই নিবন্ধন দেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
তিনি বলেন, “প্রাথমিক যাচাইয়ে শর্ত পূরণে সক্ষম ১৬টি দলকে আমরা বেছে নিয়েছি। এখন মাঠ পর্যায়ের তথ্য যাচাই হবে। সব শর্ত পূরণ হলে নিবন্ধন দেওয়া হবে।”
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই মাঠ পর্যায়ের তদন্ত শেষ করা হবে। এরপর সব ধাপের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২২ জুন পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য মোট ১৪৫টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল। প্রথম ধাপে ইসি সব আবেদন পরীক্ষা করে দেখে, অধিকাংশ দলই প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে, তাদের ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয় ঘাটতি পূরণের জন্য। এই সময়সীমা শেষ হয় ৩ আগস্ট।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা জানান, ৩ আগস্টের মধ্যে প্রাথমিক শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে ১৬টি দল। এর মধ্যে রয়েছে— জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাস্টিস ডেভেলপমেন্ট পার্টি, আম জনগণ পার্টি এবং আরও ১৩টি রাজনৈতিক দল (যাদের নাম ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে)।
রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম—দলের গঠনতন্ত্র, সদস্য সংখ্যা, নির্দিষ্ট সংখ্যক জেলায় কমিটি থাকা, সদস্য তালিকার সঠিকতা, এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমের প্রমাণপত্র। এসবের পাশাপাশি দলগুলোর অতীত রেকর্ড, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, এমনকি মাঠ পর্যায়ের সক্রিয়তাও বিবেচনায় নেয় ইসি।
এখন নজর মাঠ পর্যায়ের যাচাই-বাছাইয়ের দিকে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধাপে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত দল গিয়ে সদস্য তালিকা, সাংগঠনিক কাঠামো ও বাস্তব কার্যক্রম পরীক্ষা করবে। একবার মাঠ পর্যায়ের যাচাই শেষ হলে নিবন্ধনের জন্য উপযুক্ত দলগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নতুন এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে। কেননা, নিবন্ধিত দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের সুবিধা পাবে এবং প্রতীক বরাদ্দসহ নানা রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ