
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে। সম্প্রতি প্রকাশিত সম্পূরক ভোটার তালিকার মাধ্যমে এই নতুন তথ্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই তালিকায় নতুনভাবে যুক্ত হয়েছেন ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন, আর মৃত ভোটার কর্তন করা হয়েছে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জন।
রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি জানান, দেশের সব জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকার নির্বাচন অফিসে স্ব স্ব এলাকার হালনাগাদকৃত সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যা এখন থেকেই দেখা ও যাচাই করা যাবে।
আখতার আহমেদ আরও বলেন, নির্বাচনের আগে আরও একটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করা তরুণ-তরুণীরা, যারা এর আগে ভোটার হতে পারেননি। অর্থাৎ, আগামি তালিকা প্রকাশের সময় নতুন প্রজন্মের ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকবে।
ইসি জানায়, ভোটার তালিকায় যদি কারও নামের বানান, বয়স, ঠিকানা বা অন্যান্য তথ্যের ভুল থাকে, তাহলে আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত ত্রুটিবিচ্যুতি সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে। একইসঙ্গে কেউ যদি মনে করেন তালিকায় তার নাম বাদ পড়েছে বা ভুলভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তবে তিনিও দাবি-আপত্তি জানাতে পারবেন। এসব আবেদন নিষ্পত্তি শেষে ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
বর্তমান ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি। সে সময় বাদ পড়া ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি এবং মৃত ভোটারদের অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। এই প্রক্রিয়ায় জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য, স্থানীয় জনমত এবং পরিবার থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়।
বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতোই বাংলাদেশেও সঠিক ভোটার তালিকা নির্বাচনের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। ভুল বা মৃত ভোটারের নাম তালিকায় থাকলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাই প্রতি বছর নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময় তালিকা হালনাগাদ করে থাকে। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ কাজের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, এই বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে অনুযায়ী ভোটার তালিকার এই হালনাগাদ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি আরও জোরদার হবে। আর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরই নির্বাচনী রোল নম্বর, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ শুরু হবে।
এছাড়া, কমিশন এবার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোটার তালিকার ত্রুটি শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও কার্যকর করেছে। এতে করে একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার তালিকায় থাকার ঘটনা কমেছে এবং মৃত ভোটারদের তথ্য দ্রুত অপসারণ সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় রাখতে এই ধরনের হালনাগাদকৃত ও সঠিক ভোটার তালিকা কেবল নির্বাচনের জন্য নয়, বরং নাগরিক সেবা ও নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ