
ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারে সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় হঠাৎ করেই প্রত্যাহার করা হলো বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়াকে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এই পদ থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের পদ থেকে মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়ার প্রত্যাহারের আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। যদিও এই সিদ্ধান্তের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি, এবং সরকারি পর্যায়ে কোনো ব্যাখ্যাও এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।
জানা গেছে, প্রত্যাহারের খবরটি প্রকাশিত হওয়ার সময় এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। তিনি সেখানে একটি দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশ নিচ্ছিলেন, যার বিষয় ছিল ‘তথ্য অধিকার আইন ও এর প্রাসঙ্গিকতা’। এটি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হিসেবে আয়োজন করা হয়েছিল।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ শেষে বেবিচক চেয়ারম্যান কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলমান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পসমূহ সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এসব প্রকল্পে টার্মিনাল সম্প্রসারণ, রানওয়ে আপগ্রেড, নতুন এপ্রোন নির্মাণসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যেই তার এমন আকস্মিক প্রত্যাহার বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সূত্র বলছে, তার এ প্রত্যাহার বিষয়ে বেবিচক কিংবা বিমান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনেকেই এই খবর শুনে বিস্মিত হয়েছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা অথবা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণেই হয়তো এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে একজন এয়ার ভাইস মার্শাল এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার এমন সময় প্রত্যাহার, প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি ও পরিবেশ উভয়ের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিমান চলাচল অবকাঠামোর আধুনিকায়ন এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার সময়েই বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প অনুমোদিত হয় এবং কিছু কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
এই অবস্থায় তার আকস্মিক প্রত্যাহার প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত খাতে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এখন দেখার বিষয়, সরকার কবে এবং কাকে বেবিচকের পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় এবং নতুন নেতৃত্বে প্রকল্প ও উন্নয়ন কার্যক্রমের কী ধারা বজায় থাকে।
বাংলাবার্তা/এসজে