
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অভিযানের ফলে চলমান সংঘাতের অবসান সম্ভবত খুব তাড়াতাড়ি ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই এটি একটি যথেষ্ট ভালো, চূড়ান্ত সমাপ্তি পাবে।”
তিনি বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধের ফলে সৃষ্টি হওয়া মানবিক সংকট এবং বেসামরিক হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্পের ভাষায়, “এটার শেষ হওয়া দরকার, কারণ ক্ষুধা আর অন্যান্য সমস্যা। আর ক্ষুধার থেকেও ভয়াবহ হলো—মৃত্যু, নির্মম মৃত্যু, মানুষ নিহত হচ্ছে।”
গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি অভিযান শুরু হয় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে। এই অভিযানে ইতিমধ্যেই নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজারেরও বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিক। আহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
ট্রাম্পের আশ্বাস অবশ্য নতুন নয়। আগেও তিনি তার স্বভাবসুলভ ঢঙে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে বাস্তবে তার প্রশাসনের পদক্ষেপের ফলে যুদ্ধবিরতি বা ফিলিস্তিনি উপত্যকায় অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত হয়নি। ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে কয়েকশো কোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহ করেছে এবং একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা কার্যত জাতিগত নির্মূলের শামিল এবং আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধের শ্রেণিতে পড়ে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আসলে আমি এ নিয়ে খুশি নই। আমি এটা দেখতে চাই না। একই সঙ্গে আমাদের অবশ্যই এই পুরো দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটাতে হবে।”
এছাড়াও ট্রাম্প আলোচনা ঘুরিয়ে গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির প্রচেষ্টার দিকেও নজর দেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধু আশা নয়, এটি আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে, যাতে দ্রুতই যুদ্ধের অবসান ঘটানো যায়।
বাংলাবার্তা/এমএইচও