
ছবি: সংগৃহীত
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে একটি কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে সম্প্রতি শেয়ার হওয়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তা তাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেই ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তা ইরানের যে কোনও ক্ষতির চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর হবে।
গত কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে, তার প্রশাসন ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এই স্থাপনাগুলো হলো — ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহান। ট্রাম্প দাবি করেন, এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সব বিমান নিরাপদে ইরানের আকাশসীমার বাইরে ফিরে এসেছে।
ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে অত্যন্ত সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি।” পাশাপাশি তিনি একটি ওপেন সোর্স গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করেছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, ইরানের অত্যন্ত সুরক্ষিত এবং গোপনীয় ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এই কঠোর বার্তা আসার পরপরই ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) দেশজুড়ে জনসাধারণের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছে। নিরাপত্তাজনিত এই পদক্ষেপকে ইরানের প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আইডিএফের বক্তব্য অনুসারে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সামরিক এবং নিরাপত্তা দিক থেকে আরও সজাগ থাকা জরুরি, যাতে কোনো আকস্মিক বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ করা যায়।
ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান পারমাণবিক বিষয়ক উত্তেজনা এই সাম্প্রতিক হামলার মাধ্যমে নতুন মাত্রা পেতে পারে। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ইরানের নিরাপত্তায় গুরুতর আঘাত স্বরূপ এবং এটি অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ বিবেচিত হচ্ছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনির বার্তা এই স্পষ্ট করে দেয় যে, ইরান এই হামলার প্রতিশোধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন যে, ইরানকে ক্ষতি করার চেষ্টা করলে তারা আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়বে।
এই ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মঞ্চে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের এই উত্তেজনা। বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মধ্যস্থতা করার আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে সংঘাত আরও ভয়াবহ আকার না নেয়।
সাম্প্রতিক পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সতর্কবার্তা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতিকে নতুন করে উত্তেজনায় ফেলে দিয়েছে। এখন সারা বিশ্বের নজর এই সংঘাতের পরবর্তী ধাপের ওপর কেন্দ্রীভূত হয়েছে, যা গোটা অঞ্চলের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ