
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা, ওয়েব সিরিজ থেকে বিজ্ঞাপন— প্রায় সব মাধ্যমেই সমান জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শোবিজ অঙ্গনে সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর অভিনীত নাটক ও ওয়েব কনটেন্ট ইউটিউবে ভিউয়ের রেকর্ড গড়েছে একের পর এক, আর বিজ্ঞাপন জগতে তিনি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের শীর্ষ পছন্দ। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত এক তথ্য ভক্তদের বেশ চমকে দিয়েছে— জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর প্রকৃত নামের উচ্চারণ আসলে অনেকের জানা নেই!
এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে মেহজাবীন নিজেই বিষয়টি পরিষ্কার করেন। তিনি জানান, যেভাবে সবাই তাঁকে "মেহজাবীন" বলে ডাকেন, সেটি প্রকৃতপক্ষে তাঁর নামের সঠিক উচ্চারণ নয়। আসল উচ্চারণ হচ্ছে "মেহজাবী", যেখানে শেষের "ন" উচ্চারিত হয় না।
মেহজাবীন বলেন, “শুরুর দিকে হয়তো সবাই আমার নাম ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারেনি কিংবা আমি নিজেও বিষয়টি স্পষ্ট করে বোঝাতে পারিনি। কিন্তু পরে দেখলাম, মানুষ যে নামে আমাকে ভালোবেসে ডাকে, সেটি পরিবর্তন করার কোনো দরকার নেই। তাই নামের প্রকৃত রূপ ‘মেহজাবী’ হলেও জনপ্রিয় হয়ে গেছে ‘মেহজাবীন’। সেটাকেই সবাই ধরে রেখেছে।”
আরও বিস্ময়কর তথ্য হলো— পরিবারেও তাঁকে "মেহজাবীন" বলে ডাকা হয় না। বরং শৈশব থেকে তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন তাঁকে ডেকে আসছে একদম ভিন্ন নামে— "জেনিফার"। শৈশব থেকেই এই নামটি তাঁর জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে।
অভিনেত্রী জানান, স্কুল-কলেজ জীবনের বন্ধুদের কাছে তিনি পরিচিত "জেনি" নামে। আর ভক্তরা ভালোবেসে তাঁকে ডাকে "মেহু" বলে। তিনি বলেন, “ভক্তদের দেওয়া এই ডাকনাম আমার ভীষণ পছন্দ। এই ভালোবাসাই আসল প্রাপ্তি।”
নামের রহস্য প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ভক্তরা নানা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা আগে কখনো জানতেন না যে নামের শেষে ‘ন’ উচ্চারণ হয় না। আবার কেউ কেউ লিখেছেন, "নাম বদলালেও ভালোবাসা একই থাকবে, আমাদের কাছে আপনি সবসময়ই মেহজাবীন।"
শোবিজে নাম শুধু পরিচয়ের মাধ্যম নয়, বরং একটি ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে। মেহজাবীনের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে। তাঁর জনপ্রিয়তা এমন এক স্তরে পৌঁছেছে যেখানে "মেহজাবীন" নামটি এখন নাটক, ওয়েব সিরিজ ও বিজ্ঞাপনের বাজারে এক ধরনের গ্যারান্টি— মানে থাকছে জনপ্রিয়তা ও গুণগত মানের নিশ্চয়তা।
২০০৯ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন মেহজাবীন। প্রথমদিকে বিজ্ঞাপনেই বেশি দেখা গেলেও দ্রুত নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দর্শকপ্রিয়তা পান। পরবর্তীতে ওয়েব সিরিজ ও চলচ্চিত্রেও নিজের উপস্থিতি জানান দেন। চরিত্র নির্বাচনে তাঁর যত্নশীলতা ও অভিনয়ের গুণে এক দশকের বেশি সময় ধরে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, নাম নিয়ে বিভ্রাট থাকলেও মেহজাবীনের জনপ্রিয়তায় কোনো ভাটা পড়েনি। বরং এই ছোট্ট তথ্যই তাঁর ভক্তদের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও ব্যক্তিগত ও আন্তরিক করে তুলেছে। এখন হয়তো কেউ কেউ নতুন করে ডাকতে শুরু করবেন— "মেহজাবী", "জেনিফার" কিংবা "মেহু"। কিন্তু যে নামেই ডাকুক, ভক্তদের হৃদয়ে তাঁর স্থান অপরিবর্তিত।
বাংলাবার্তা/এমএইচ