
ছবি: সংগৃহীত
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর ব্যক্তিজীবন আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তার সাবেক স্ত্রী নাজিয়া হাসান অদিতি এবং তাদের একমাত্র সন্তান আয়ান ফারুক। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেলেকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশের পর নেটিজেনদের কিছু নেতিবাচক মন্তব্য অদিতির দীর্ঘদিনের নীরবতা ভেঙে দিয়েছে। আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানালেন, এমন মন্তব্য কেবল আঘাতই দেয় না, বরং সন্তানের মানসিকতাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি ভিডিওকে ঘিরে। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে ছেলেকে সারপ্রাইজ দেন অপূর্ব। সেই মুহূর্তে বাবা-ছেলের আনন্দ, আবেগ ও ভালোবাসা ধরা পড়ে ভিডিওটিতে। দৃশ্যটি ছিল দর্শকদের জন্য আবেগঘন ও মনোমুগ্ধকর। কিন্তু এর নিচে কিছু ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, আয়ান ‘একা’ বা ‘একাকী’ জীবন কাটাচ্ছে। এমন শব্দ ব্যবহার অদিতির কাছে ছিল অত্যন্ত কষ্টদায়ক।
অদিতি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা প্রতিক্রিয়ায় বলেন— “আপনাদের অনেকেই হয়তো দেখেছেন, আমার ছেলের বাবা অনেক দিন পর দেশে ফিরে ওকে সারপ্রাইজ দিয়েছে। মুহূর্তটি ছিল অসাধারণ, কিন্তু কিছু মানুষ ভিডিওটির নিচে এমন মন্তব্য করেছেন, যা আমাকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই—আমার ছেলে আমার কাছেই থাকে। ও সবসময় ভালোবাসা, যত্ন ও নিরাপত্তার মধ্যে আছে। তার সব চাহিদা পূরণ করা হয়। সপ্তাহের শেষের দিকে বা যখন ওর ইচ্ছা হয়, তখন ওর বাবার কাছে যায়। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে ওর সুখ নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও যোগ করেন, “দয়া করে আমাদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হোন। সম্পূর্ণ ঘটনা না জেনে মন্তব্য করলে তা কষ্ট দেয় এবং অনেক সময় পরিস্থিতিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। যারা আমাদের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন জানাচ্ছেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”
এই প্রতিক্রিয়া প্রকাশের পর নেট দুনিয়ায় শুরু হয় আলোচনার ঝড়। অনেকেই অদিতির পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ নেতিবাচক মন্তব্যকারীদের আচরণের সমালোচনা করেছেন। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের মন্তব্য শিশু ও পরিবারের জন্য মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে, তাই মন্তব্য করার আগে সচেতন হওয়া জরুরি।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৪ জুলাই পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন অপূর্ব ও নাজিয়া হাসান অদিতি। প্রায় আট বছরের সংসার জীবনের পর ২০১৯ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর থেকে আয়ান তার মায়ের সঙ্গেই থাকছে এবং পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠার সমস্ত দায়িত্ব অদিতি সামলাচ্ছেন। তবে বাবা-ছেলের সম্পর্ক সবসময়ই বজায় রয়েছে, এবং সুযোগ পেলেই তারা একসঙ্গে সময় কাটান।
অদিতির এই খোলামেলা প্রতিক্রিয়া একদিকে যেমন নেতিবাচক মন্তব্যকারীদের প্রতি সরাসরি বার্তা, অন্যদিকে নেটিজেনদের জন্যও একটি স্মরণীয় শিক্ষা—ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়ে অযাচিত মন্তব্যের আগে সহানুভূতি ও বিবেচনা থাকা জরুরি।
বাংলাবার্তা/এমএইচ