
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ক্রিকেটে আবারও নেমে এসেছে ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া। বিপিএলের গত আসর নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্বাধীন তদন্ত কমিটি। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের হাতে এই বিশাল আকারের—তিন হাজার পৃষ্ঠার বেশি—প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নাম প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।
বিতর্কের শুরু
গত আসরের বিপিএলকে ঘিরে শুরু থেকেই বিতর্ক থামছিল না। বিদেশি তারকার অনুপস্থিতি, মানসম্পন্ন খেলার ঘাটতি, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক না দেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে আসরটি ছিল সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তারওপর কিছু ম্যাচে অস্বাভাবিক পারফরম্যান্স ও আচরণে সন্দেহ জন্মায়। শোনা যেতে থাকে ফিক্সিংয়ের গুঞ্জন।
এই পরিস্থিতিতে বিসিবি ফেব্রুয়ারিতে তিন সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে। তারা মাঠের ভিডিও, ম্যাচের রিপোর্ট, খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজির জবানবন্দি এবং আর্থিক লেনদেনের কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট তৈরি করে।
বিসিবির বিবৃতি
২৬ আগস্ট এক বিবৃতিতে বিসিবি জানায়, “আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নিয়ম মেনে তদন্ত করছি। কারও নাম আগেভাগে প্রকাশ করলে তার ন্যায্য বিচার ব্যাহত হতে পারে। তাই আমরা চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে কোনো অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করব না।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বোর্ড সবার সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে যারা জড়িত, তাদের আইসিসি দুর্নীতি বিরোধী আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।”
প্রাথমিক রিপোর্টে সুপারিশ
তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে বিপিএল আয়োজনে বেশ কিছু সংস্কারের প্রস্তাবও এসেছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
-
দুর্নীতি প্রতিরোধে আলাদা নজরদারি ইউনিট তৈরি
-
ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনা
-
খেলোয়াড়দের সময়মতো পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা
-
ম্যাচ পরিচালনা ও খেলার মান উন্নত করা
-
সন্দেহজনক যোগাযোগ পর্যবেক্ষণ জোরদার করা
চূড়ান্ত রিপোর্টের অপেক্ষা
চূড়ান্ত প্রতিবেদন আগামী মাসের শেষদিকে বিসিবির হাতে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে বিস্তারিত অনুসন্ধান, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম, এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের দিকনির্দেশনা থাকবে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন নজর রাখছেন সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের দিকে। সেটিই নির্ধারণ করবে, বিসিবি কতটা কঠোর পদক্ষেপ নেয় এবং ভবিষ্যতে বিপিএল কতটা বিশ্বাসযোগ্য আসর হিসেবে টিকে থাকতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচও