
ছবি: সংগৃহীত
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে কার্যকর সমাধান চাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, এটি এমনভাবে করা হবে যাতে বিষয়টি বারবার বিঘ্নিত না হয় এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।
আজ (২৭ আগস্ট) ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চে বিষয়টি নিয়ে শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না। বরং এটি চাইছে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান যাতে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ন্ত্রিত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হয়।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)সহ কয়েকটি পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করেছেন। এর আগে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে।
এই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়। পরে পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে ২০২৪ সালে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং নওগাঁর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন রিট আবেদন করেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে প্রথম রিট দায়ের হয়, এরপর দীর্ঘ শুনানির পর ২০০৪ সালে হাইকোর্ট ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে। ২০০৫ সালে আপিল হলে ২০১১ সালে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়।
আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার শফিউল আলম বলেন— "এ রিভিউ আবেদনগুলি শুধু আইনগত বিশ্লেষণের বিষয় নয়। এটি দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।"
আজকের শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে যে বিচারপতিরা রায় দিয়েছেন, তারা সবাই পরে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এ তথ্য শুনানি প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এবারের শুনানিতে আপিল বিভাগের ৬ সদস্যের বেঞ্চ রিভিউ আবেদনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ করে বিষয়টি কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আগামী শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে নজর রাখার মতো একটি বিষয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচও