
ছবি: সংগৃহীত
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন দেশের লাখো মানুষ। এই ঘরমুখো জনস্রোতের বিপরীতে এবার শুরু হচ্ছে ফিরতি যাত্রা। কর্মস্থলে ফেরা যাত্রায় সাধারণ মানুষের অন্যতম ভরসা আন্তঃনগর ট্রেন। সেই লক্ষ্যে ঈদের পরদিন থেকে শুরু হয়েছে ফিরতি টিকিট বিক্রি। আজ শনিবার (১ জুন) বিক্রি হচ্ছে ১১ জুনের ট্রেনের অগ্রিম টিকিট।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে এবং টিকিট কালোবাজারি রোধে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা ১১ জুন তারিখে বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেনে ফিরতে চান, তারা আজ থেকেই সেই দিনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। এই টিকিট সংগ্রহ করা যাবে সকাল ৮টা থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে।
টিকিট বিক্রির নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর টিকিট সকাল ৮টা থেকে বিক্রি শুরু হয়। আর পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিট দেওয়া হয় দুপুর ২টা থেকে। ফলে কেউ যদি রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, খুলনা বা অন্যান্য পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনে ভ্রমণ করেন, তাদের টিকিট সংগ্রহের জন্য সকালের সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম, সিলেট, নোয়াখালী কিংবা কুমিল্লার মতো পূর্বাঞ্চলগামী যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয় দুপুর পর্যন্ত।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটি শেষে সাতদিনের ফিরতি ট্রেন যাত্রার জন্য অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থায়। এর মধ্যে ৯ জুনের টিকিট বিক্রি হয়েছে ৩০ মে, ১০ জুনের টিকিট ৩১ মে, ১১ জুনের টিকিট আজ ১ জুন বিক্রি হচ্ছে। আগামী দিনে বিক্রির তারিখগুলোও নির্ধারিত:
১২ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২ জুন
১৩ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৩ জুন
১৪ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৪ জুন
১৫ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৫ জুন
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদের ফিরতি যাত্রার টিকিট ফেরত দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, যারা টিকিট কিনবেন, তাদের সেই তারিখে নির্ধারিত যাত্রা করতেই হবে। টিকিটপ্রত্যাশীরা একবারে সর্বোচ্চ চারটি আসনের টিকিট কিনতে পারবেন। তবে একাধিক টিকিট কিনলে সহযাত্রীদের নাম অনলাইনে টিকিট কেনার সময়েই উল্লেখ করতে হবে।
রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “অনলাইনে শতভাগ টিকিট বিক্রির ফলে সার্ভারে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। তবে আমরা সার্ভার সক্ষমতা বাড়িয়েছি, যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে টিকিট কিনতে পারেন।”
পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ঈদের আগে টিকিট বিক্রির সময় অনেকে অ্যাপে ঢুকতেই পারতেন না, কেউ কেউ পেমেন্ট করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। তাই এবার আগেভাগে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঈদের সময়কালীন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ২০টির বেশি স্পেশাল ট্রেন চালানো হচ্ছে। এগুলো রাজধানীর বাইরে থেকে আগত এবং রাজধানীতে ফেরত যাত্রীদের সুবিধা দেবে।
তবে যাত্রীরা যেন সময়মতো টিকিট সংগ্রহ করেন এবং ভুয়া ওয়েবসাইট বা ফেক অ্যাপ থেকে সাবধান থাকেন, সে ব্যাপারেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রতি বছর ঈদের পর অফিস-আদালত খুললেই শুরু হয় কর্মস্থলে ফেরার দৌড়। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। যাত্রী চাপ সামাল দিতে বাড়তি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং স্টাফ মোতায়েনও বাড়ানো হয়েছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টিকিট বিক্রি, প্ল্যাটফর্মে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ এবং ট্রেন ছাড়ার সময়সূচি যথাসময়ে পালন নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সব মিলিয়ে আজ ১১ জুনের টিকিটের মাধ্যমে ঈদের ফিরতি ট্রেনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ শুরু হলো। যাত্রীদের উচিত, নির্ধারিত সময়ে অনলাইনে ঢুকে টিকিট নিশ্চিত করে কর্মস্থলে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়া।
বাংলাবার্তা/এমএইচ