
ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান ও সহিংসতার ফলে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদানে বাংলাদেশের মানবিক পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রশংসা করেছে। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকেও রোহিঙ্গাদের সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
সংবাদ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন টমাস “টমি” পিগট রোববার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সহিংসতা এবং বাস্তুচ্যুতির শিকার রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি জানাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে আগত শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকেও ধন্যবাদ জানাই।”
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের পর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়। কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে দেশটিতে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছিল। বর্তমানে নতুন আগতদেরসহ প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার ও আশপাশের ক্যাম্পে বসবাস করছে। প্রতি বছর এ শরণার্থীদের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার শিশু, যা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে শরণার্থীদের জন্য খাদ্য, পানি, চিকিৎসা এবং শিক্ষাসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিভিন্ন ধরণের সহায়তা দিয়ে আসছে। টমাস পিগট বলেন, “মানবিক সহায়তা প্রদানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন, যাতে শরণার্থীদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা যায়।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশ এমন সময়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে, যখন নিজস্ব সীমিত সম্পদ ও অবকাঠামোর মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন। কক্সবাজার ক্যাম্পে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একত্র কাজ করছে। বাংলাদেশের এই মানবিক উদ্যোগকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত করা হয়েছে, যা বিশ্বের জন্য রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচও