
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান দাবি করছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত ইস্যু সমাধান হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ দাবি প্রত্যাখ্যাত। বিশ্লেষকরা মনে করেন, একাত্তর ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক সমাধান ছাড়া দুই দেশের সম্পর্কের পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণ সম্ভব নয়।
শনিবার দুই দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার। তিনি প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপি চেয়ারপারসন, জামায়াত আমিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে দুই দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ।
সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, একাত্তর ইস্যুর দুই দফায় সমাধান করেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ সরকার এটি নাকচ করেছে এবং সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রথম শর্ত হিসেবে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ওপর জোর দিচ্ছে।
সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, “পাকিস্তান যদি সত্যিকারের বন্ধু রাষ্ট্র হতে চায়, তারা অবশ্যই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইবে। খোলা মনে ক্ষমা না চাইলে আমরা মনে করি, এটি আন্তরিক নয়। তাই সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। আমরা ধীরে ধীরে এবং পর্যায়ক্রমে এগোতে চাই।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের স্বীকৃতি ছাড়া সমাধান কার্যকর হবে না। সংসদে রেজুলেশন প্রণয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা না চাইলে আনুষ্ঠানিক সমাধান হিসেবে গণ্য হবে না। সমাধান কেবল তখনই সম্পূর্ণ হয় যখন দুই দেশের মধ্যে ঘোষণার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একাত্তর ইস্যু ছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে বাণিজ্যিক সহযোগিতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফেরানো, এবং প্রবাসী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানবিক বিষয়গুলোও আলোচনার টেবিলে থাকতে হবে।
এ ধরনের ধাপে ধাপে সমাধানই কেবল পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণ ও স্থিতিশীল কূটনৈতিক সম্পর্ক নিশ্চিত করতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচও