
ছবি: সংগৃহীত
বুধবার (৬ আগস্ট) দেশের অন্তত ১২টি জেলায় বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে নদীবন্দর সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ১২ জেলার নদীবন্দরগুলোকে।
সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ ছিল মেঘলা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, দুপুর ১টা পর্যন্ত এই ঝড়ো আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়, দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
পূর্বাভাসে ঝড়ের সম্ভাব্য প্রভাব পড়বে যেসব জেলায় সেগুলো হলো—ঢাকা, পাবনা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রাম।
বলা হচ্ছে, এই ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও হতে পারে। বিশেষ করে দুপুর পর্যন্ত এসব জেলার বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রপাতজনিত ঝুঁকি থাকায় খোলা জায়গা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, “বর্ষাকালে এমন ঝড়বৃষ্টি অস্বাভাবিক নয়। তবে আজকের পরিস্থিতিতে বাতাসের গতি ও আর্দ্রতা তুলনামূলক বেশি থাকায় ঝড়ো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।”
নদীপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনকারীদের জন্য এটি একটি সতর্কতা সংকেত। ১ নম্বর সংকেত সাধারণত তখনই দেখানো হয়, যখন ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার হয় এবং বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য এখনো কোনো সতর্ক সংকেত নেই। তবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় এবং বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল থাকায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে।
বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় আজ সারাদিন আংশিক মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থাকতে পারে এবং কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানান, এই বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে এবং তাপপ্রবাহের প্রকোপ কিছুটা হ্রাস পাবে। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরমে মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। আজকের ঝড়বৃষ্টি সাময়িক স্বস্তি দিলেও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার আশঙ্কাও রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি ঝড়ের সময় ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের খোলা জায়গা ও বিদ্যুতায়িত পরিবেশ থেকে দূরে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী সময়েও আরও সতর্কবার্তা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
দেশের যেসব জেলায় এ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে, সেইসব অঞ্চলের প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে সর্বশেষ আপডেট জানিয়ে যাবে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বাংলাবার্তা/এমএইচ