
ছবি: সংগৃহীত
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে কয়েকটি জেলায় ঝড়ো হাওয়া এবং বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সাতটি জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে, যা জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগ ডেকে আনতে পারে। নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানোর নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এর সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এই সতর্কতা মূলত নৌযান ও ছোট ট্রলারের জন্য প্রযোজ্য, যেগুলোকে স্বাভাবিকের তুলনায় আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের আরেকটি পূর্বাভাসে জানানো হয়, দেশের বিস্তৃত অংশজুড়েই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় মাঝারি থেকে অতিভারি বর্ষণও ঘটতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে নগরজীবনে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে এবং নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, তা আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে মৌসুমী বায়ু, যা বৃষ্টি বাড়াতে সাহায্য করছে। ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত সব অঞ্চলেই কমবেশি বৃষ্টি হতে থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৃষ্টিপাত একদিকে যেমন স্বস্তি নিয়ে এসেছে খরায় ভোগা চাষিদের জন্য, অন্যদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষ করে বজ্রপাতের সময়। খোলা মাঠ, উঁচু ভবনের ছাদ এবং বিদ্যুৎ সংযোগযুক্ত জিনিসপত্র থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নৌপথে চলাচলকারী ব্যক্তিদের জন্যও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পরিশেষে বলা যায়, দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোতে আজ দুপুরের মধ্যে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে এবং আগামী দিনগুলোতেও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তাই নাগরিকদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন আবহাওয়া অফিসের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য এবং নির্দেশনা অনুসরণ করেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ যেকোনো কার্যক্রম এড়িয়ে চলেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ