
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার আকাশ ছুঁয়ে ওঠে স্মৃতির আলোয়, যখন ১৪ জুলাই মধ্যরাতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় ড্রোন শো, যা বিশেষভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অবদান ও ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোকে স্মরণ করেছে। ‘জুলাই উইমেনস ডে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই চমকপ্রদ প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে আন্দোলনের বিভিন্ন মুহূর্ত, যেগুলো জাতীয় ইতিহাসে অনস্বীকার্য অবদান রেখেছে।
এই ড্রোন শোতে ব্যবহার করা হয়েছে হাজারো ড্রোন, যা সমন্বিতভাবে নানা ছবি, প্রতীক এবং গুরুত্বপূর্ণ বাক্যাবলী আকাশে প্রদর্শন করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার নারী শিক্ষার্থী এই ঐতিহাসিক প্রদর্শনীটি দেখে বিমোহিত হয়েছে। তারা উদ্দীপনা নিয়ে শোটি উপভোগ করেন এবং দীর্ঘক্ষণ স্মৃতিচারণ করেন।
ড্রোন শোতে তুলে ধরা হয়েছে ১৯৬৯ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়কার নারীদের সাহসিকতা ও সংগ্রামের মুহূর্তগুলো। পাশাপাশি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেই সময় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন স্লোগান এবং রাজনৈতিক উক্তি, যা আন্দোলনকারীদের আবেগ ও প্রত্যয়ের প্রতীক।
প্রদর্শনীর একাংশে আওড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্রূপাত্মক উক্তি: ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?’। এছাড়া ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’সহ আরো একাধিক স্লোগান এবং বাক্যবলি আকাশে ঝলমল করে উঠেছিল।
শোতে বিশেষ গুরুত্ব পায় ১৯৬৯ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের স্মরণ এবং সাম্প্রতিক সময়ের শহীদদের প্রতিকৃতি, যেমন: বুয়েটে ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত আবরার ফাহাদ এবং ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত তন্বীর ছবি। এছাড়াও বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ডের মতো ইতিহাসে দাগ কাটা ঘটনাগুলোর প্রতিচ্ছবিও উজ্জ্বল আকাশে ফুটে ওঠে।
এই ঐতিহাসিক ড্রোন শো জাতীয় চেতনা জাগ্রত করতে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে জাতীয় ঐতিহ্য ও ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করতে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। রাজধানীর আকাশে বিজয়ের বার্তা বহন করে এই শো একটি মাইলফলক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ