
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ এখনও চূড়ান্ত না হলেও, সময়মতো নির্বাচন, মনোনয়ন ও প্রতীক বরাদ্দ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জনগণকে জানানো হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন মঙ্গলবার রাজধানীর নির্বাচন কমিশন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, “নির্বাচনের তারিখ এখনো আমারও জানা নেই। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্তত দুই মাস আগে ভোটের দিনসহ সব তথ্য জনগণের কাছে জানিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি সবার কাছে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সময় হলে নির্বাচনের যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত জানানো হবে। এ বিষয়গুলো নির্ধারিত সময়েই জনগণ জানতে পারবে।”
নির্বাচন কমিশনারের এই মন্তব্য নির্বাচনের আগমুহূর্তে চলমান জল্পনা-কল্পনা ও আলোচনা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছি। এখন দায়িত্ব পালনের সময়। সবাই ভোট দিয়ে তাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করুক—এই বার্তা প্রচারে সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”
সিইসি স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করেন, পূর্বে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ এবারও সেই সাফল্য অর্জিত হবে। তিনি প্রশাসন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরামর্শ দেন, “এবার আপনাদের সম্মান ফিরিয়ে আনার সুযোগ এসেছে, প্রমাণ করুন যে আমরা পারি।”
একই সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “অনেক সময় দেখা যায় একটি সংবাদ ইতিবাচক হলেও হেডলাইন বা স্ক্রল নেতিবাচক লেখা হয়, যা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে ও হতাশায় ফেলে। দয়া করে এমন ক্যাপশন ব্যবহার করুন যা মূল বার্তাটি সঠিকভাবে জনগণের কাছে পৌঁছে।”
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনারগণ — আবদুর রহমানেল মাসউদ, তাহমিদা আহমেদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আরএফইডির সভাপতি কাজী জেবেল এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সঞ্চালনা করেন।
এই সম্মেলনে নির্বাচন প্রক্রিয়া, ভোটারের অধিকার ও দায়িত্ব, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু সম্পন্ন করার জন্য সকলের সহযোগিতা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা তুলে ধরে নির্বাচনের সাফল্যে তাদের অবদানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সিইসির এ বক্তব্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে ভোটপ্রক্রিয়া নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব জাগাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া, সময়মতো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং প্রাসঙ্গিক প্রস্তুতি নিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য জনসাধারণের মধ্যে আস্থার উন্নয়ন ঘটাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সার্বিকভাবে, নির্বাচন কমিশনের এই পক্ষপাতহীন ও সময়োপযোগী বক্তব্য আগামী নির্বাচনের পরিবেশকে স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, সাংবাদিক ও জনগণ মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ