
ছবি: সংগৃহীত
দেশব্যাপী দীর্ঘদিনের ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনরায় ক্লাস পরিচালনার জন্য খোলা হচ্ছে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফেরত আসছে প্রায় এক কোটি শিশু শিক্ষার্থী, যারা দীর্ঘদিনের ছুটির পর আবারো বিদ্যালয়ের পাঠশালায় ফিরে পড়াশোনা শুরু করবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো গত ৩ জুন থেকে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে গিয়েছিল। মোট ২১ দিন চলে এই বিশ্রামকাল, যা ২৩ জুন পর্যন্ত ছিল। ২৪ জুন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস পরিচালনা শুরু হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত শিক্ষাপঞ্জিতেও ছুটির সময়সীমা ও ক্লাস শুরুয়ের তথ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
এই দীর্ঘ ছুটির ফলে প্রায় এক কোটি শিশুর পড়াশোনার রুটিন বিরতি পেয়েছিল। দীর্ঘদিনের ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুলে ফেরার আগ্রহ ও প্রত্যাশা বাড়লেও করোনাভাইরাস এবং ডেঙ্গু জ¦রার আতঙ্ক শিক্ষাব্যবস্থায় নানা প্রস্তুতির পাশাপাশি কঠোর স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তাও তৈরি করেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই পুনরায় ক্লাস শুরুর আগেই দেশে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রম চলমান রয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে গত ১৩ জুন সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং সেখানকার শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ করছে।
এরপর ২২ জুন থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে মাদরাসাগুলো, যেগুলো আগামী ২৬ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো হয়েছে। তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত স্যানিটাইজেশন ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়গুলোতে অভিভাবকদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সচেতন করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকরা গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমের ক্ষতি পূরণ ও সামনের সেশনকে আরও ফলপ্রসূ করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। বর্ধিত সময়কালে পাঠ্যক্রম পুনরায় সাজানো, অতিরিক্ত টিউটোরিয়াল ক্লাস নেওয়া এবং বাড়তি কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
দীর্ঘ ছুটির পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুনরায় ক্লাস শুরুর বিষয়টি দেশের শিক্ষা খাতে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে ধরা হচ্ছে। দেশের লক্ষাধিক শিশু শিক্ষার্থী যখন পুনরায় পাঠশালায় ফিরে আসবে, তখন শিক্ষার্থীদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এই শিক্ষার্থী গোষ্ঠী দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ