
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার আশুলিয়ায় গত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ছয় জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ এই শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামী ২১ আগস্ট দিন ধার্য করেছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল–২ এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর শুনানিতে অংশ নেন। মামলাটি তদন্ত ও প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রমাণ উপস্থাপন এবং সাক্ষীদের জবানবন্দি প্রদানের পর বর্তমানে অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে পৌঁছেছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষে গাজী এমএইচ তামিম মূল শুনানি পরিচালনা করেন, সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, সাইমুম রেজা তালুকদার ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান। অন্যদিকে আসামিপক্ষের হয়ে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন ও পাটোয়ারী এম মাহাদী হাসান যুক্তি উপস্থাপন করেন।
এর আগে ৭ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তি উপস্থাপন শেষ করলে আসামিপক্ষ অতিরিক্ত সময় চান। ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহ সময় দিয়ে আজকের তারিখ (১৩ আগস্ট) নির্ধারণ করে। আজ আসামিপক্ষের বক্তব্য শেষে আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশ ঘোষণার জন্য ২১ আগস্ট ঠিক করেন।
মামলায় মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আটজন বর্তমানে গ্রেফতার অবস্থায় আছেন এবং আদালতে হাজির করা হয়েছে। তারা হলেন—
সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম
ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী
ঢাকা জেলা ডিবি উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন
আশুলিয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক আবদুল মালেক
আরাফাত উদ্দীন
কামরুল হাসান
শেখ আবজালুল হক
সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার
অন্য আট আসামি পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক বিশ্বজিৎ সাহা এবং আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। ট্রাইব্যুনাল এই আটজন পলাতকের পক্ষে দুইজন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানকালীন সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে আশুলিয়ার একটি এলাকায় ছয়জনকে আটক করে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয় এবং পরে মরদেহগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়। এই বর্বর ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। তদন্তে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত ভিডিও ও আলামত আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী, আগামী ২১ আগস্ট অভিযোগ গঠন হবে কিনা সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে। এর মাধ্যমে মামলাটি বিচার পর্যায়ে অগ্রসর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ