
ছবি: সংগৃহীত
নেপালের বিপক্ষে আসন্ন দুই প্রীতি ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত ২৩ সদস্যের এই দলে বড় অনুপস্থিতি দুই প্রবাসী ফুটবলার—হামজা চৌধুরী ও শমিত সোম। আগেই অনুমান করা হচ্ছিল যে ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী এই সফরে থাকছেন না, শেষ পর্যন্ত তাই হলো। একইভাবে ক্লাব ব্যস্ততার কারণে আসতে পারছেন না শমিত সোমও।
ইনজুরি ও ক্লাব ব্যস্ততায় অনুপস্থিত হামজা-শমিত
গত শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে বার্মিংহাম সিটির বিপক্ষে লেস্টার সিটির হয়ে খেলার সময় হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়েন হামজা। ম্যাচের ৭২ মিনিটে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়। এরপর লেস্টার সিটির চিকিৎসক ও কোচিং স্টাফরা তাকে বিশ্রামে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সামনে আরও ব্যস্ত মৌসুম থাকায় ক্লাব কর্তৃপক্ষও তাকে ছাড়তে রাজি হয়নি। তাই বাংলাদেশ দলের হয়ে নেপাল সফরে খেলা হচ্ছে না হামজার।
অন্যদিকে, শমিত সোমও ক্লাব ফুটবলে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তার ক্লাব থেকে ছাড়পত্র না মেলায় তিনিও নেপালের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না।
অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কারণে কিছু পরিবর্তন
এবারের ঘোষিত দলে আগের ম্যাচে থাকা বেশ কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড়কে রাখা হয়নি। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান বাছাইপর্বের ম্যাচে থাকা মেহেদী হাসান শ্রাবণ, শাকিল আহাদ, ফাহামিদুল ইসলাম, আল-আমিন, শেখ মোরসালিন, মজিবর রহমান ও জাহিদ হাসানকে এবার জাতীয় দলে না রেখে পাঠানো হয়েছে অনূর্ধ্ব-২৩ দলে। আসন্ন অনূর্ধ্ব-২৩ প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে তাদের সেখানে খেলানো হবে বলে জানিয়েছে বাফুফে।
নতুন মুখ ও প্রত্যাবর্তন
জাতীয় দলে নতুন চমক হিসেবে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন ফর্টিস এফসির ডিফেন্ডার আব্দুল্লাহ ওমর। তাকে ভবিষ্যতের ডিফেন্স লাইন গড়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিবেচনা করছেন কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল। তাদের ফেরাটা দলের অভিজ্ঞতা ও ভারসাম্য রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রীতি ম্যাচের সময়সূচি
বাংলাদেশ-নেপাল প্রীতি ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর। ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কাঠমান্ডুর বিখ্যাত দশরথ স্টেডিয়াম। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে নেপাল রয়েছে ১৭৬তম স্থানে, আর বাংলাদেশ ১৮৪তম স্থানে। ফলে মাঠের লড়াই হবে সমানে-সমান। তবে বাংলাদেশ দল সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা উন্নতি করেছে বলে আশা করা হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে।
ঘোষিত দল
গোলরক্ষক: সুজন হোসেন, মিতুল মারমা, পাপ্পু হোসেন।
ডিফেন্ডার: মেহেদী হাসান, রহমত মিয়া, তপু বর্মন, তাজ উদ্দিন, আব্দুল্লাহ ওমর, তারিক কাজী, ইসা ফয়সাল, সাদ উদ্দিন।
মিডফিল্ডার: মোহাম্মদ হৃদয়, জামাল ভূঁইয়া, পাপন সিং, সোহেল রানা (সিনিয়র), সোহেল রানা, শাহ কাজেম।
ফরোয়ার্ড: আরিফ হোসেন, শাহরিয়ার ইমন, রাকিব হোসেন, ফয়সাল আহমেদ, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুমন রেজা।
প্রত্যাশা
বাংলাদেশ ফুটবল দল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রীতি ম্যাচে ভালো করতে না পারলেও কোচ কাবরেরা এবার আত্মবিশ্বাসী। তরুণ ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের মিশেলে তৈরি করা এই দলকে নিয়ে তিনি নতুন কৌশল প্রয়োগ করতে চান। ফুটবলপ্রেমীদের আশা, নেপালের বিপক্ষে অন্তত একটি জয় তুলে নিয়ে দল আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ