
ছবি: সংগৃহীত
দেশজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের মধ্যেই আজ শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে দেশের একাধিক অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত গরম ও আর্দ্রতার কারণে জনজীবনে অসহনীয় অবস্থা বিরাজ করলেও শুক্রবার সকাল থেকে মেঘলা আকাশ এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির আভাস কিছুটা স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে।
আজ ১৩ জুন (শুক্রবার) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুক সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এসব অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আজকের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা মূলত দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল জুড়ে বেশি। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সাগরের প্রভাব এবং দক্ষিণা বাতাস সক্রিয় থাকায় এইসব অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বজ্রবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, চাঁদপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম শহর ও কক্সবাজার উপকূলে বিকেলের দিক থেকে মেঘ গাঢ় হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি।
অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলজুড়ে তাপপ্রবাহ এখনো বেশ সক্রিয়। রাজশাহী বিভাগজুড়ে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহী শহরে ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে, এখানেও কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রবৃষ্টিপাত হতে পারে, তবে তা বিচ্ছিন্নভাবে হবে।
রংপুর বিভাগজুড়ে মৃদু তাপপ্রবাহ চলমান রয়েছে। বৃহস্পতিবার এখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পূর্বাভাস বলছে, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীর ১-২টি স্থানে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে হতে পারে।
সিলেট বিভাগের আকাশ সারাদিনই আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই বিভাগেও ২-৩টি স্থানে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখানেও মৃদু তাপপ্রবাহের প্রভাব বজায় রয়েছে।
ঢাকা বিভাগের আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা। তবে বিকেলের দিকে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলগুলোয় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জ অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে দুপুরের সময়টিতে রাস্তায় প্রচণ্ড গরম অনুভূত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিভাগের অন্যান্য অংশেও কিছু কিছু স্থানে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হতে পারে। চট্টগ্রাম শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরিশাল বিভাগেও কয়েকটি স্থানে বৃষ্টিপাত হতে পারে। বরিশাল শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
খুলনা বিভাগে যশোর, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। গতকাল খুলনা শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখানেও বিকেলের পর থেকে ১-২ জায়গায় হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আজ দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি থাকলেও উত্তরাঞ্চলে গরম অব্যাহত থাকবে। রাজধানীসহ কিছু কেন্দ্রীয় জেলায় বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে সামান্য স্বস্তির বৃষ্টি নামতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা আগামী ২-৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপপ্রবাহ ধীরে ধীরে কমে আসবে। তবে তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাবার্তা/এমএইচ