
ছবি: সংগৃহীত
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে মাদক চোরাচালান ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। তাদের সজাগ তৎপরতায় আবারও ধরা পড়লো এক চতুর মাদক পাচারকারী। পাকস্থলীতে ইয়াবা লুকিয়ে বহনকালে এক বিমানযাত্রীকে আটক করেছে এপিবিএন। আটককৃত ব্যক্তির নাম মোঃ রাজু মোল্লা (৩২)। তার কাছ থেকে মোট ১,০০০ (এক হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
এপিবিএন জানায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অভ্যন্তরীণ BS 142 ফ্লাইটে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আসেন রাজু। বিমানবন্দরে নামার পর সন্দেহজনক আচরণের কারণে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়। এরপর বলাকা ভবনের উত্তর পার্শ্ব এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজু স্বীকার করেন, তিনি পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছেন।
পরে তাকে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হলে এক্স-রে পরীক্ষায় তার পাকস্থলীতে ডিম্বাকৃতির প্রায় ২০টি বস্তু দেখা যায়। নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে প্রাকৃতিকভাবে পায়ুপথ দিয়ে একটি একটি করে বস্তু বের করা হয়। এগুলো ছিল কসটেপ দিয়ে মোড়ানো প্যাকেট। মোট ২০টি প্যাকেট থেকে পাওয়া যায় ১,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট।
এপিবিএনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃত রাজু মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রি ও পাচারের সঙ্গে জড়িত। কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা পরিবহন তার নিয়মিত কাজের অংশ ছিল। তবে এবার পুলিশি গোয়েন্দা তথ্যের কারণে ধরা পড়লো তার অভিনব কৌশল।
ঘটনার পর বিমানবন্দর থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর ৩৬(১) এর ১০(ক) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে রাজু পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশনস) জনাব অনিতা রানী সূত্রধর বলেন, “আমরা বিমানবন্দরকে ঘিরে যেকোনো অবৈধ কার্যক্রম ও চোরাচালান প্রতিরোধে সর্বদা সচেষ্ট। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে কেউ যাতে অপরাধ কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর।”
সাম্প্রতিক সময়ে মাদক চোরাচালানকারীরা ক্রমাগত নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। কখনও তারা যাত্রী বেশে, কখনও মালপত্রের ভেতরে, আবার কখনও পাকস্থলীতে লুকিয়ে ইয়াবা বহন করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এই ধরনের পাচার রোধে আধুনিক প্রযুক্তি, গোয়েন্দা তথ্য এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
রাজু মোল্লার গ্রেপ্তার আবারও প্রমাণ করলো যে, মাদক চোরাচালানকারীরা যতই কৌশল অবলম্বন করুক না কেন, এপিবিএনের সতর্কতা ও আধুনিক ব্যবস্থার কারণে তাদের ধরা পড়তেই হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশাবাদী, এই ধরনের অভিযান মাদক চক্রের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বার্তা হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাবার্তা/এসজে