
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সম্প্রতি একটি চিঠি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন অপব্যাখ্যার বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। প্রতিষ্ঠানটি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সেনা সদস্যদের হেনস্তা সংক্রান্ত যে চিঠি সেনা সদর থেকে প্রেরণ করা হয়েছিল, সেটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর পেছনে একটি ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ কাজ করছে বলেও দাবি করা হয়।
শুক্রবার (১১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, সম্প্রতি সেনা সদর থেকে প্রেরিত একটি প্রশাসনিক চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। ওই চিঠিতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে সংঘটিত কিছু ঘটনার প্রসঙ্গে সেনা সদস্যদের হেনস্তার অভিযোগসংবলিত একটি তালিকা প্রেরণের কথা বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা তৈরি করে সামাজিক ও প্রচারমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করা হয়েছে।
আইএসপিআর পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, সেনা সদর থেকে প্রেরিত ওই চিঠি কোনো স্বতন্ত্র উদ্যোগ ছিল না; বরং এটি পিলখানায় ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহকালে সংঘটিত মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ তদন্তে গঠিত ‘জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন’-এর একটি তথ্যচাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পাঠানো হয়েছিল। সেনাবাহিনী কেবল তদন্ত কমিশনের চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যেই এই তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিল।
তবে সেনা সদর থেকে পরবর্তীতে বিষয়টি নতুন করে মূল্যায়ন করে তাৎক্ষণিকভাবে চিঠিটির কার্যক্রম বাতিল করা হয়। কারণ, এতে সম্ভাব্য ভুল ব্যাখ্যার আশঙ্কা ছিল, যা সেনা ও পুলিশের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারত। আইএসপিআর দাবি করে, এর পরও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ইচ্ছাকৃতভাবে এই চিঠিকে ভিত্তি করে সেনাবাহিনী ও পুলিশের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনাস্থা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও পারস্পরিক পেশাগত সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ—দুই গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীই দীর্ঘদিন ধরে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং দুর্যোগ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জাতীয় সংকটে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে আসছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সম্মান, সমন্বয় ও পেশাগত সৌহার্দ্যের ভিত্তিতে দুই বাহিনীর মধ্যে যে সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে, তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
আইএসপিআরের পক্ষ থেকে সকল মহলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে এবং কোনো বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করতে আহ্বান জানানো হয়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুই বাহিনীর মধ্যে অবিচল আস্থা ও সম্মান অটুট রাখতে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে বিরত থাকার অনুরোধও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ