
ছবি: সংগৃহীত
ইরানকে দুর্বল করার জন্য মার্কিন প্রচেষ্টা চলমান এবং সেই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়েছেন, ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তাদের মিত্র ইসরাইলের কাছে মাথানত করবে না।
রোববার রাজধানী তেহরানে দেশটির শীর্ষ সামরিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে খামেনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আসল লক্ষ্য হচ্ছে ইরানকে তাদের শর্তে পরিচালিত করা, ওয়াশিংটনের আনুগত্যে বাধ্য করা। কিন্তু ইরানি জনগণ, সেনাবাহিনী ও সরকার মিলে শত্রুর সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।”
সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে। ওয়াশিংটন ও তেহরানের কূটনৈতিক দূরত্ব কমাতে কিছুটা উদ্যোগ দেখা গেলেও ইরান অভ্যন্তরে ভিন্ন সুর। খামেনির বক্তব্য সেই কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাঝেই মার্কিন বিরোধিতার একটি কড়া বার্তা হিসেবে এসেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, গত জুন মাসে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের যৌথ হামলা আসলে ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। “এটি কেবল সামরিক হামলা ছিল না, বরং গোটা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর চেষ্টা,” মন্তব্য করেন তিনি।
খামেনি বলেন, শত্রুরা এখন ইরানের অভ্যন্তরে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের এজেন্টরা সমাজে ফাটল ধরিয়ে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়। তবে জনগণ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবসময় ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, “আল্লাহর কৃপায় আজ দেশ একতাবদ্ধ। মতের অমিল থাকলেও যখন শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর বিষয় আসে, তখন সবাই এক কাতারে।”
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইদ গোলামি বলেন, “খামেনির বক্তব্য কেবল দেশীয় রাজনীতির জন্য নয়, এটি একটি ভূ-রাজনৈতিক বার্তা। ইরান এখন এমন এক পরিস্থিতিতে আছে যেখানে পশ্চিমা চাপ এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকট উভয়ই মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তার পরও নেতার বক্তব্য জনগণকে উজ্জীবিত করার কৌশল।”
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক আনা ফেরারা জানান, “খামেনির বার্তা থেকে বোঝা যায়, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপসে রাজি নয়। তবে অন্যদিকে, সরকার পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনার মাধ্যমে সময় কিনতে চাইছে।”
বাংলাবার্তা/এমএইচও