
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্পেনের নাগরিক মারিয়া মিম এক সময় বিনোদন অঙ্গনের আলোচিত দম্পতি ছিলেন। তাদের সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল ২০১২ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে। বিয়ের এক বছর পর, ২০১৩ সালে জন্ম নেয় তাদের একমাত্র পুত্রসন্তান আরশ হোসেন। শুরুতে সবকিছু ঠিকঠাক চললেও, বছর কয়েক যেতে না যেতেই তাদের সম্পর্কের মাঝে চিড় ধরে।
২০১৮ সালের শুরুর দিকে মারিয়া মিম জানান, তিনি অভিনয় ও বিনোদন দুনিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী। কিন্তু তার স্বামী সিদ্দিকের সঙ্গে এই সিদ্ধান্তে মতানৈক্য দেখা দেয়। ধীরে ধীরে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়তে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে তারা বিবাহবিচ্ছেদে যান। বিচ্ছেদের পর ছেলে আরশ মায়ের সঙ্গেই থাকত, যদিও এই নিয়ে মাঝেমধ্যে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
বিচ্ছেদের পর মারিয়া মিম স্পেনে ফিরে যান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মত করে জীবনযাপনের ছবি-ভিডিও শেয়ার করে চলেছেন নিয়মিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবনে নতুন পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এই দীর্ঘ বিরতির পর আবারও প্রেমে পড়েছেন মিম। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, নতুন একটি সম্পর্কে জড়িয়েছেন এবং শিগগিরই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন।
ভিডিওটিতে মিমকে এক তরুণের সঙ্গে দেখা যায়, যদিও তার মুখ প্রকাশ করা হয়নি। মিম ভিডিওতে ওই তরুণকে ‘আমার ভালোবাসা’ বলে সম্বোধন করেছেন। এই বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং অনেকেই জানতে চান তিনি কি আবার বিয়ে করতে যাচ্ছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মারিয়া মিম জানিয়েছেন, “হ্যাঁ, আমি প্রেম করছি। তবে আমার বয়ফ্রেন্ড মিডিয়ার না। তিনি মিডিয়ার বাইরের লোক। সামনেই আমরা বিয়ে করব।”
তবে মিম স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি তার অতীত জীবন নিয়ে আর কোনো আলোচনা চান না। সিদ্দিকের প্রসঙ্গ এলে তিনি বলেন, “সিদ্দিক তো আমার প্রাক্তন। ডিভোর্স হয়ে গেলে তার সঙ্গে দেখা করাটাও পাপ। তিনি আমার জন্য এখন একজন পরপুরুষ। যার সঙ্গে দেখা করাটাও পাপ। প্লিজ, সিদ্দিককে জামাই বানায় দিয়েন না।”
তবে এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি সেলিব্রিটি ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫ নিয়ে একটি বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন মারিয়া মিম। একটি ম্যাচের আয়োজনে অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগ এনে মোট ৬ জন মডেল-অভিনেত্রী এবং ৩ নির্মাতার বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন একজন আইনজীবী। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে মারিয়া মিমের নামও।
এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মিম বলেন, “এই আইনজীবী ভাইরাল হওয়ার জন্য আমাদের নাম ব্যবহার করছেন। কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই আমাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব, মামলা করব।”
তিনি আরও বলেন, “বিদেশে আমি যদি একটু খোলামেলা পোশাক পরি, সেটি আমার পছন্দ। কিন্তু দেশে আমি এমন কিছু করি না। তাই আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি না করাই ভালো।”
মারিয়া মিম বর্তমানে তার নতুন সম্পর্ক ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বেশ আশাবাদী। মিডিয়ার বাইরের একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী করতে চলেছেন তিনি। দীর্ঘ সময় পর জীবনকে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ তার ভক্তদের মাঝেও নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
তবে একদিকে যেমন ভালোবাসা ও বিয়ের খবর নিয়ে তিনি আলোচনায়, তেমনি সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও তার সাহসী অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—নিজের মতো করে জীবন যাপনের স্বাধীনতা এবং অন্যায় আক্রমণের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিবাদ।
বাংলাবার্তা/এমএইচ