
ছবি: সংগৃহীত
নতুন অর্থবছরের শুরুতে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিবেগ কমে গেছে। জুলাই মাসে বাজেট বাস্তবায়ন এবং এডিপি খরচ এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজস্ব আহরণও প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। এই ধীরগতি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, চাহিদার ঘাটতি এবং বিনিয়োগ কম হওয়ার কারণে ঘটেছে।
সিপিডি’র তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, “নতুন প্রকল্প গ্রহণে সতর্কতা জরুরি। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহী হন না। বিনিয়োগ না বাড়লে অর্থনীতির অর্জন টেকসই হবে না।” তিনি আরও বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের নিশ্চয়তা ছাড়া নতুন শিল্প-প্রকল্প চালু করা সম্ভব নয়।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে মোট বরাদ্দ ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। জুলাই মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ১,৬৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ। এদিকে, গত অর্থবছরের একই সময় বাস্তবায়ন হয়েছিল ২,৯২২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। জুলাই মাসের এই মন্থর বাস্তবায়ন গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জুলাই মাসে ২,৮৬৪ কোটি টাকার ঘাটতি রিপোর্ট করেছে। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ছিল ৩০,১১১ কোটি টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ২৭,২৪৭ কোটি টাকা। চলমান ধীরগতির প্রভাব আগামী অর্থবছরের রাজস্ব সংগ্রহেও পড়তে পারে।
বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের ঘাটতি, নতুন কর্মসংস্থানের অভাব এবং মূল্যস্ফীতির চাপ সাধারণ মানুষের সঞ্চয় সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি আবার বৃদ্ধি পেয়েছে ৮.৫৫ শতাংশে, যা মার্চে ৯.৩৫ শতাংশ থেকে ক্রমশ কমার পর পুনরায় বৃদ্ধি। ব্যাংক খাতে আমানত বৃদ্ধি ৭.৭৭ শতাংশে সীমাবদ্ধ থেকেছে।
অর্থনীতির ধীরগতির কারণে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না, বিনিয়োগ স্থবির এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিরাপদ পরিবেশ, গ্যাস-বিদ্যুতের নিশ্চয়তা এবং বিনিয়োগে আস্থা ফিরলে অর্থনীতি পুনরায় গতিশীল হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচও