
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত ইস্যু বহু আগেই দুইবার সমাধান হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এখন অতীত নয়, ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। রবিবার (২৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দিনের শুরুতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ইসহাক দারের একান্ত বৈঠক হয়। বৈঠকে উভয় দেশ পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার ও অগ্রাধিকারভিত্তিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে। একান্ত বৈঠক শেষে দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হয়, যেখানে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।
চুক্তি ও সমঝোতার মধ্যে ছিল—সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, কৃষি ও প্রযুক্তি সহযোগিতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং শিক্ষা-গবেষণায় যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসহাক দার বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত ঘটনাবলি নিয়ে বিতর্ক বহুবার হয়েছে। তবে এ ইস্যু ১৯৭৪ সালে প্রথমবার নিষ্পত্তি হয়। তখনকার চুক্তি দুই দেশের জন্যই ঐতিহাসিক ছিল। পরে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ঢাকায় এসে প্রকাশ্যে ও খোলামনে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। অর্থাৎ, বিষয়টির নিষ্পত্তি দুইবার হয়েছে—একবার ১৯৭৪ সালে এবং আরেকবার ২০০০ সালের শুরুর দিকে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ধর্ম ইসলামও শিক্ষা দেয় হৃদয় পরিষ্কার রাখতে। তাই আমি মনে করি, হৃদয়ের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে অতীত ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত।”
এর আগে শনিবার (২৩ আগস্ট) একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদ আলম সিয়াম।
ঢাকায় পৌঁছার পরদিনই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এ ছাড়া পাকিস্তান হাউসে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সফরের দ্বিতীয় দিনে রবিবার ইসহাক দার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তার এ সফরকে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচও