
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এক চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামসহ একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
সই হওয়া চুক্তি ও সমঝোতার মধ্যে অন্যতম হলো—
-
সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া বিলোপ,
-
বাণিজ্য নিয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন,
-
বিনিয়োগ ও ব্যবসা খাতে সহযোগিতা,
-
কৃষি উন্নয়নে যৌথ কার্যক্রম,
-
সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা খাতে বিনিময় কর্মসূচি।
বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা প্রসঙ্গ। বাংলাদেশ এ সময় পাকিস্তানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা এবং মুক্তিযুদ্ধের আগে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া সম্পদের হিস্যা ফেরত চায়।
এছাড়া বৈঠকে ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট ও শিপিং সেবা চালুর উদ্যোগ, কৃষি প্রযুক্তি বিনিময়, ব্যবসা-বিনিয়োগে পারস্পরিক সুবিধা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হয়। উভয় দেশই সম্পর্ক জোরদারের আগ্রহ প্রকাশ করে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
এর আগে শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম। ঢাকায় পৌঁছে বিকালে তিনি বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এদিকে সফরের দ্বিতীয় দিনে রবিবার সন্ধ্যায় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানের বাসায় সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সফর দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুনভাবে পুনর্গঠনের একটি সুযোগ তৈরি করেছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচও