ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যখন মনোনয়ন প্রার্থী বাছাইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে, তখন বঙ্গবন্ধু ও গণতন্ত্রের পথে যাত্রা পুনরায় শুরু হওয়ায় ভোটাররা উৎসুক হয়ে রয়েছেন। বিশেষ করে বিএনপি, দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল, ইতোমধ্যেই ৩০০ আসনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শেষ করেছে এবং শিগগিরই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভোটাধিকার হলো গণতন্ত্রে সবচেয়ে বড় নাগরিক অধিকার। দেশের নাগরিকরা এবারের নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘ্ন ও স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারা নিশ্চিত করতে হলে কেবল সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের ওপর নির্ভর করা যথেষ্ট নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে দলগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই দায়িত্ববোধকে সামনে রেখে বিএনপি ইতোমধ্যেই নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩০০ আসনের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বিএনপি এবার নির্বাচনে শরিকদের সঙ্গে জোট গঠন করবে। ইতোমধ্যেই নির্বাচনি মিত্রদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আসনের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এই তালিকাগুলো বিএনপির হাইকমান্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে এই তালিকা যাচাই-বাছাই করছেন। তারেক রহমান দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রথমে জোট শরিকদের জন্য আসন বরাদ্দ চূড়ান্ত করবেন। এর পর বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফেরার পর চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা ঘোষণা করা হবে। তবে এর আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হতে পারে।
দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রার্থী নির্বাচন করতে পাঁচটি মূল মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন। এই মানদণ্ডগুলোর ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হবে।
এলাকায় ক্লিন ইমেজ: প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকা, চাঁদাবাজি, দখল বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকা।
এলাকায় জনপ্রিয়তা: সারা দেশের নির্বাচনি আসনে জরিপ চালিয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী বাছাই করা হবে। তবে জনপ্রিয়তা একমাত্র মাপকাঠি নয়।
দেশ ও দলের জন্য ত্যাগ: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সীমাহীন অত্যাচার, নির্যাতন বা কারাবিধির মধ্যে যারা ছিলেন, তাদের মনোনয়ন বিবেচনায় আসবে। তবে এটি হবে অন্য যোগ্যতার শর্ত পূরণের পরে।
সংগঠনের জন্য অবদান: গত ১৭ বছরে যারা দলকে সমর্থন করেছেন, সাংগঠনিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
দলীয় কোন্দল থেকে মুক্ত: যারা দলে কোন্দলে জড়াননি এবং এলাকায় গ্রুপিং করেননি, তাদের মনোনয়ন প্রদানে অগ্রাধিকার থাকবে।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা ইতোমধ্যেই এই পাঁচটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন। তবে কিছু আসনে একাধিক সমমানের প্রার্থী থাকলে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, বিএনপির এই দায়িত্বশীল মনোনয়ন প্রক্রিয়া এবং জোটশক্তির সমন্বয় দেশের নির্বাচনে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ এবং প্রত্যাশা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এভাবে, বিএনপি প্রার্থী বাছাইয়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এবং দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মুহূর্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা ইতোমধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



