
ছবি: সংগৃহীত
ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটির পর দেশের নানা প্রান্ত থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের নির্বিঘ্নে নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আগামী ১৪ জুনের জন্য আন্তঃনগর ট্রেনের আসনের টিকিট আজ অর্থাৎ ৪ জুন থেকে অগ্রিম বিক্রির মাধ্যমে যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এই পদক্ষেপ মূলত ঈদুল আজহার ছুটির পরে যাত্রীদের ফিরতি যাত্রাকে সহজতর ও সুষ্ঠু করতে নেয়া হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সকালে সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চল বরাবর চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি শুরু হবে। অপরদিকে, একই দিন দুপুর ২টা থেকে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও পুরোপুরি অনলাইনের মাধ্যমে শতভাগ আসন বিক্রির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোগান্তি কমিয়ে দেয়ার একটি উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অনলাইনে টিকিট কেনার মাধ্যমে যাত্রীরা যে কোনো সময় এবং যে কোনো স্থান থেকে সহজেই টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।
ঈদ উপলক্ষে রেলওয়ের পরিচালিত কর্মপরিকল্পনার আলোকে জানা গেছে, এর আগেও ধারাবাহিকভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ৯ জুনের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছিল ৩০ মে, ১০ জুনের জন্য টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৩১ মে, ১১ জুনের জন্য ১ জুন, ১২ জুনের জন্য ২ জুন, ১৩ জুনের জন্য ৩ জুন, এবং আগামী ১৫ জুনের জন্য টিকিট বিক্রি হবে ৫ জুন। এই ধারাবাহিক বিক্রির মাধ্যমে ঈদের সময় যাত্রীদের প্রয়োজন অনুযায়ী টিকিট সংগ্রহের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিশেষ করে এবারের ঈদে রেলওয়ে এক সপ্তাহ বা ৭ দিনের জন্য আগাম টিকিট বিক্রির বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে, যা ঈদ পরবর্তী যাত্রী সেবাকে আরও সুগম করবে। এ সময়ে কেনা টিকিটের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো, যাত্রীরা একবার কেনা টিকিট কোনো অবস্থাতেই ফেরত দিতে পারবেন না। এর ফলে পরিকল্পিত যাত্রা এবং আসন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রেলওয়ের নির্ভরযোগ্যতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতিজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪টি আসনের টিকিট একবারে কিনতে পারবেন। তবে ৪টির বেশি আসন কিনলে, সহযাত্রীদের নাম এবং তথ্য অবশ্যই টিকিট কেনার সময় দিতে হবে। এই প্রক্রিয়া রেলওয়ের টিকিটিং ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঈদের সময় দেশে যাত্রী চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে, ফলে ট্রেনের আসন সঙ্কট এবং টিকিট সংকট নিত্যনৈমিত্তিক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিকীকরণ ও প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোগের ফলে এ ধরনের সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন।
সাধারণ মানুষের নিরাপদ, আরামদায়ক এবং সময়মত যাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রেলওয়ের এই বিশেষ উদ্যোগকে ইতিবাচক স্বাগত জানানো হচ্ছে। সরকারেরও পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রেলওয়ের পাশাপাশি অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও সুষ্ঠু ও দক্ষ করে তোলার চেষ্টা চলছে যাতে সামগ্রিকভাবে ঈদ পরবর্তী ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের চাহিদা পূরণ করা যায়।
ট্রেনের এই ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এখন অনলাইনে বা নির্ধারিত কাউন্টারে গিয়ে সহজেই তাদের যাত্রার ব্যবস্থা করতে পারবেন। আশা করা যাচ্ছে, এই উদ্যোগ দেশের জনগণের ঈদযাত্রাকে আরও আরামদায়ক ও নিরাপদ করবে এবং দেশের ট্রেন চলাচলের কার্যকারিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ