
ফাইল ছবি
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন মঙ্গলবার (৩ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দেশজুড়ে ঈদুল আজহার আনন্দঘন পরিবেশে যাতে মুসল্লিরা সুসংগঠিতভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন, সে লক্ষ্যে বছরব্যাপী ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমিনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ১০ জিলহজ ১৪৪৬ হিজরি, যা ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৭ জুন শনিবার, সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন। রাজধানীবাসীসহ দূরদূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের কথা মাথায় রেখে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের মতো এবারও পাঁচটি ঈদের জামাত আয়োজন করা হচ্ছে।
প্রথম জামাত সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন যাত্রাবাড়ীস্থ তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও খ্যাতনামা আলেম ড. খলিলুর রহমান মাদানী। এই জামাতে মুকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের অভিজ্ঞ খাদেম মো. আব্দুল হাদী।
দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে, যার ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী। তার সঙ্গে মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মো. নাসির উল্লাহ।
তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। এই জামাতে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্মানিত সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির হবেন মো. বিল্লাল হোসেন।
চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রবীণ আলেম ও মুফতী মো. আব্দুল্লাহ। মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মো. আমির হোসেন।
পঞ্চম এবং সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমাম হিসেবে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন। তাঁর সঙ্গে মুকাব্বির হবেন মো. জহিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কোনো জামাতে নির্ধারিত ইমাম অনুপস্থিত থাকলে, সেই ক্ষেত্রে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম। একইভাবে, কোনো মুকাব্বির উপস্থিত হতে না পারলে, তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পালন করবেন মসজিদের আরেক খাদেম মো. রুহুল আমীন।
ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এই উপলক্ষে প্রতিবারই বায়তুল মোকাররম মসজিদে লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায়ে অংশগ্রহণ করে থাকেন। যেহেতু এটি জাতীয় পর্যায়ের কেন্দ্রীয় জামাত, তাই সরকার, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ জামাতগুলোর সুষ্ঠু ও নিরাপদ আয়োজন নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
মসজিদ এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা, ওয়াশরুম ও ওজুখানার ব্যবস্থা, নারীদের জন্য নির্ধারিত নামাজ কক্ষ এবং পথনির্দেশনা সংবলিত স্বেচ্ছাসেবক টিম মোতায়েন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন আশা প্রকাশ করেছে, প্রতিটি জামাতে যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে মুসল্লিরা সুসজ্জিত ও পরিপাটি অবস্থায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন এবং কোরবানির মহান তাৎপর্য হৃদয়ে ধারণ করে ঈদ উদযাপন করবেন।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের পক্ষ থেকে ঈদের জামাতে অংশ নিতে ইচ্ছুক সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, তারা যেন নির্ধারিত সময়ের অন্তত ২০-৩০ মিনিট আগে মসজিদে উপস্থিত হন, যাতে করে ভিড় ও নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা এড়ানো যায়।
ঈদুল আজহার মূল বাণী—ত্যাগ, শুদ্ধতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আত্মনিবেদন—এই চেতনা ধারণ করে দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি, সহমর্মিতা ও ঐক্য আরও সুদৃঢ় হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ