
ছবি: সংগৃহীত
দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অতি সংবেদনশীল এক মুহূর্তে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার বা সম্প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের প্রচার কেবল আইনের লঙ্ঘন নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার একটি গুরুতর হুমকি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম আইন অমান্য করে শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য সম্প্রচার করেছে, যেখানে তার মিথ্যা ও উসকানিমূলক মন্তব্য প্রকাশ পায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং অনলাইন আউটলেটগুলোতে শেখ হাসিনার অডিও সম্প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। এছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালও সাবেক স্বৈরশাসকের বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করেছে।
বিবৃতিতে সতর্ক করা হয়েছে, “আমরা এ ধরনের অপরাধমূলক প্রচারে জড়িত গণমাধ্যমের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করিয়ে দিয়েছে, দেশের জনগণ প্রথমবারের মতো সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক নীতির ভিত্তিতে দেশকে পরিচালিত করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “শেখ হাসিনার উসকানিমূলক মন্তব্য ও বক্তৃতা দেশের স্থিতিশীলতা বিপন্ন করতে পারে। এগুলো প্রচার জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করে এবং সহিংসতা উসকে দেয়। এজন্য সংবাদমাধ্যমগুলোকে দায়িত্বশীলতা ও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শত শত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীর উপর গণহত্যার নির্দেশ দেওয়ার গুরুতর অভিযোগের পরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারাধীন রয়েছেন।
তদুপরি, দেশের আইন অনুসারে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী, যে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন যারা তাদের নেতাদের কার্যকলাপ, বক্তব্য বা বক্তৃতা প্রচার করে, তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আওতায় পড়বে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করে। এটি কেবল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যেই করা হয়। বিধিনিষেধ অমান্যকারী সংবাদমাধ্যমরা বাংলাদেশের আইনের অধীনে জবাবদিহিতার আওতায় পড়বে।”
সরকারি দপ্তর থেকে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে, দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা উচিত নয়। সমস্ত গণমাধ্যমকে সতর্ক করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে তাদের দায়িত্বশীলতা এবং আইন মেনে চলা অপরিহার্য।
বাংলাবার্তা/এমএইচ