
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩৪৪ জন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৪ জনে। একই সময়ে আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ২৩০ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক আপডেটে বলা হয়, সর্বশেষ হতাহতের মধ্যে পাঁচজন অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এতে করে গত প্রায় দুই বছরে দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে, যাদের মধ্যে ১১২ জনই শিশু।
গাজার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকা থাকলেও লাগাতার বোমাবর্ষণ ও উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে তাদের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে অনেক মরদেহ রাস্তায় পড়ে রয়েছে কিংবা ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে।
শুধু তাই নয়, মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিরাও ইসরাইলি হামলার শিকার হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের হামলায় ২৭ জন নিহত ও ২৮১ জন আহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত, ২৭ মে থেকে মানবিক সহায়তা সংগ্রহকালে অন্তত ১ হাজার ৯৬৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৭০১ জন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর প্রতিশোধ ও জিম্মিদের উদ্ধারের নামে ওইদিন থেকেই গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল।
এরপর থেকে টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে হামলা চলছে। যদিও ১৯ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল, কিন্তু মাত্র দুই মাস পর ১৮ মার্চ আবারও গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। সেই নতুন অভিযানে ১০ হাজার ৪৬০ জন নিহত এবং ৪৪ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও বিচারাধীন রয়েছে।
গাজার পরিস্থিতি ক্রমশ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারই হুমকির মুখে। আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর নিন্দা সত্ত্বেও ইসরাইলি আগ্রাসন থামছে না।
বাংলাবার্তা/এমএইচ