
ছবি: সংগৃহীত
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২০২৪–২৫ অর্থবছরের রেকর্ড মুনাফা ৯৩৭ কোটি টাকা, যা ৫৫ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে এ মুনাফা অর্জনের সময় কোম্পানির পদ্মা অয়েল ও বিপিসির কাছে ২০০০ কোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। অর্থাৎ, বিপুল আয়ের পাশে বকেয়ার অপ্রত্যাশিত চাপও আছে।
নতুন হিসাব অনুযায়ী, জুন মাসের শেষের দিকে পদ্মা অয়েলের কাছে জেট ফুয়েল বিক্রি বাবদ বাকি ছিল ২১০০ কোটি টাকা। জুলাইয়ে কিছু অর্থ পরিশোধ হলেও বাকি ২০০০ কোটি টাকার ওপরে। এই দেনা নিয়ে এখনও পদ্মা অয়েল ও বিপিসি থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
বিমানের কার্যক্রমের বিস্তারিত বিবরণে দেখা যায়, ৩.৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন, ৪৩,৯১৮ টন কার্গো পরিবহন এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ড হয়েছে। দ্রুত লাগেজ সরবরাহ, আধুনিক ইন-ফ্লাইট সেবা এবং বিমানবন্দর প্রক্রিয়ার উন্নয়ন যাত্রী সন্তুষ্টি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অর্থনীতিবিদ ও শিল্প বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মুনাফা অর্জনের সঙ্গে দেনার এই ব্যালেন্স একটি সতর্কবার্তা। অর্থনীতিবিদ ড. ফেরদৌস আলম বলেন, “বিমানের বকেয়া ২০০০ কোটি টাকার বেশি থাকলে এটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে পরিচালন দক্ষতা ও যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির কারণে মুনাফা সম্ভব হয়েছে। এটি একটি দ্বিচারিত পরিস্থিতি।”
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবীর বলেন, “আমরা যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান আস্থা ও সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে সব ধরনের অপারেশনাল মান বজায় রেখেছি। এটি আমাদের রেকর্ড মুনাফার পেছনে মূল প্রভাবক।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যাত্রীসেবা ও অপারেশনাল কার্যক্রম উন্নত থাকলেও, সরবরাহকৃত জেট ফুয়েল ও অন্যান্য দেনা সময়মতো পরিশোধ না হলে আর্থিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২১–২২ অর্থবছরের সর্বোচ্চ মুনাফা ছিল ৪৪০ কোটি টাকা। এখন ২০২৪–২৫ অর্থবছরে তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এই মুনাফা অর্জনের পেছনে মূল প্রভাব যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি, কার্গো পরিবহন বৃদ্ধি, কেবিন ফ্যাক্টর উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা মান বজায় রাখা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ