
ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রথমবারের মতো এক টেবিলে বসতে পারেন ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৮ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন।
হোয়াইট হাউস বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান, ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং ইউরোপের ভূমিকাকে আরও সুদৃঢ় করা। বৈঠকের পরপরই তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার সারসংক্ষেপ তাকে জানান। ট্রাম্প বলেন— “আমি পুতিনকে ফোন করে জানাই, আমরা একটি নির্দিষ্ট স্থানে বৈঠকের কাজ শুরু করেছি। এটি হবে পুতিন-জেলেনস্কির মধ্যে প্রথম সরাসরি শীর্ষ সম্মেলন।”
এর আগে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। সেখানেও তিনি যুদ্ধ শেষ করার প্রস্তাব এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি “২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন”।
ট্রাম্পের বক্তব্যের পর ক্রেমলিন থেকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা এসেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। যদিও অতীতে রাশিয়া সবসময় ইউক্রেনকে ‘অবৈধ নেতৃত্বাধীন দেশ’ আখ্যা দিয়ে বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছিল। তাই এবার পুতিনের অবস্থান কূটনৈতিক মহলে বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
বৈঠকে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য একটি নতুন কাঠামো তৈরি করা হবে। এতে নেতৃত্ব দেবে ইউরোপীয় দেশগুলো, আর যুক্তরাষ্ট্র থাকবে সমন্বয়কের ভূমিকায়। তবে কী ধরনের সহায়তা বা প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।
জেলেনস্কি এই প্রতিশ্রুতিকে “একটি বড় পদক্ষেপ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, ইউক্রেনের জন্য এটি ভবিষ্যতের নিরাপদ ভিত্তি তৈরি করবে।
যদিও ট্রাম্প বলেছেন, পুতিন ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা মেনে নিতে প্রস্তুত, তবে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে রাশিয়ার আপত্তি অটল। পুতিন বারবারই কিয়েভের ন্যাটো আকাঙ্ক্ষাকে ‘রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের এই মধ্যস্থতা যদি সফল হয় তবে যুদ্ধের সমাপ্তির পথ সুগম হবে। তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, অতীতে মিনস্ক চুক্তির মতো উদ্যোগও ভেস্তে গেছে, তাই বাস্তব ফলাফল দেখতে আরও সময় লাগবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ