
ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রের রাজস্ব ক্ষতির সঙ্গে জড়িত থাকার গুরুতর অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একজন কর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতিতে ভূমিকা রেখেছেন। এর প্রেক্ষিতে ফরিদপুর কর অঞ্চলের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে এনবিআর।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এনবিআরের কর প্রশাসন-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান স্বাক্ষর করেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে এনবিআর। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে বিপুল রাজস্ব ক্ষতিসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২ অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি খোরপোশ ভাতা পাবেন। এনবিআরের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জনস্বার্থ রক্ষায় এই আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কর ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সংস্থাটি। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা নিয়ে রাজস্ব আদায়ে গাফিলতি করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বড় অঙ্কের ক্ষতির কারণ হয়েছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সরকারি চাকরিজীবীদের শৃঙ্খলা বিধির সরাসরি লঙ্ঘন।
প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করা হয়েছে, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এবং সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কারণ, রাজস্ব থেকে অর্জিত অর্থ দেশের উন্নয়ন ব্যয়ের প্রধান উৎস। কর্মকর্তাদের অনিয়ম বা দুর্নীতি সেই উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সাম্প্রতিক সময়ে অনিয়মে জড়িত একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই বরখাস্তের ঘটনা ভবিষ্যতে অন্যদের জন্যও একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এনবিআর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, কোনো কর্মকর্তা যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, তবে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি চাকরিজীবী বিধি অনুযায়ী, সাময়িক বরখাস্ত থাকলেও মাসুদুর রহমান খোরপোশ ভাতা পাবেন। তবে বিভাগীয় তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হওয়া কিংবা অন্যান্য শাস্তি কার্যকর হতে পারে।
বাংলাবার্তা/এসজে