
ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে দেশের তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং একটি স্থলবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন অকার্যকর থাকা চিলাহাটি স্থলবন্দর, দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর এবং তেগামুখ স্থলবন্দর সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রেস সচিবের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব স্থলবন্দরের বেশিরভাগই কেবল কাগজে অনুমোদিত ছিল। বাস্তবে কোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রম গড়ে ওঠেনি। সেখানে পর্যাপ্ত অবকাঠামোও নেই। তবুও কর্মকর্তাদের পোস্টিং দিতে হতো এবং সরকারের রাজস্ব খাতে অকারণে ব্যয় হচ্ছিল। করদাতাদের অর্থ থেকে সেই ব্যয় বহন করতে হচ্ছিল বলে বিষয়টি সরকারের জন্য অযৌক্তিক আর্থিক চাপ তৈরি করছিল।
তিনি আরও বলেন, অতীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় সীমান্ত এলাকায় কয়েকটি স্থলবন্দর ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় অর্থনীতি বা সীমান্ত বাণিজ্যের বাস্তব চাহিদার সঙ্গে সেগুলোর অনেকটাই অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। ফলস্বরূপ সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য জমেনি, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও হয়নি।
প্রেস সচিব জানান, বর্তমানে কার্যত অকার্যকর থাকা আরও চারটি স্থলবন্দর নিয়ে আলোচনায় হয়েছে। মন্ত্রিসভা কমিটির পর্যালোচনা শেষে ভবিষ্যতে সেগুলো নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অর্থাৎ এ সিদ্ধান্ত কেবল এখনকার নয়, ভবিষ্যতে আরও কিছু স্থলবন্দর একই পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সীমিত সম্পদকে কার্যকর খাতে ব্যবহার করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেসব স্থলবন্দর ব্যবসায়িক চাহিদা পূরণ করছে না, সেগুলো চালু রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তবে স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতি যেন না হয়, সেজন্য বিকল্প উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ