
ছবি: সংগৃহীত
‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’–কে ঘিরে সরকারিভাবে আয়োজিত কর্মসূচিগুলোর অংশ হিসেবে সব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে, ওই দিন ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ৩ আগস্ট, রোববার দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ উপলক্ষে নির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। বিশেষ করে উৎসবের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে ৫ আগস্ট ঢাকার তেজগাঁওয়ের নভোথিয়েটার থেকে বিজয় সরণি এলাকা পর্যন্ত আয়োজিত শোভাযাত্রায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ৫ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে ঢাকা মহানগরীর তেজগাঁও এলাকায় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সরকারি সব দপ্তর, বিভাগ এবং সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রত্যাশিত।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, "নিজ নিজ ব্যাংকের পক্ষ থেকে উৎসবের ব্যানারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য। এ উৎসবের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের শক্তি ও অঙ্গীকারকে সামনে রেখে দেশব্যাপী ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।”
ব্যাংক কর্মকর্তাদের এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে অভ্যন্তরীণ নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, শোভাযাত্রার জন্য নির্ধারিত ব্যানার, টি-শার্ট ও অন্যান্য সামগ্রী প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়েছে। অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে, একই দিনে অর্থাৎ ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ পালিত হওয়ায় দেশের সব তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ। রোববার এক সার্কুলারে বলা হয়, “গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী তফসিলি ব্যাংকগুলোও বন্ধ থাকবে।”
এই পরিস্থিতিতে উৎসব ও ছুটি—দুটি বিষয় সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। যদিও ব্যাংকগুলো বন্ধ থাকবে, তবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক রাখার মাধ্যমে একটি প্রতীকী ও সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে একাধিক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের আয়োজন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্দীপনা জাগাতে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগের একটি চিত্রও তুলে ধরবে।
‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ মূলত একটি দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি, যার মাধ্যমে দেশের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি, নেতৃত্বগুণ ও সমাজ পরিবর্তনের ভূমিকা তুলে ধরা হবে। এর মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি, সেমিনার, কর্মশালা এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক খাতের সম্পৃক্ততা মূলত তরুণদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও উদ্যোক্তা গড়ে তোলার বিষয়েও প্রতীকী ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সব মিলিয়ে ৫ আগস্ট শুধু একটি ছুটির দিন নয়, বরং একটি প্রতীকী দিন হিসেবেই উদযাপিত হতে যাচ্ছে—যেখানে ব্যাংক খাতের অংশগ্রহণ বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণদের উদ্দেশ্যে আয়োজিত শোভাযাত্রায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ একটি নতুন বার্তা দেবে বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ