
ছবি: সংগৃহীত
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের জন্য রেলপথকে অন্যতম প্রধান পরিবহন মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করে ফিরতি ঈদযাত্রার জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এরই অংশ হিসেবে আজ (৩১ মে, শনিবার) শুরু হয়েছে ১০ জুন তারিখে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর ফিরতি টিকিট বিক্রি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে পূর্বাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি। এবারো টিকিট বিক্রি সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে, কোনোভাবেই কাউন্টারে এই টিকিট পাওয়া যাবে না।
রেলওয়ের ঈদ-পরবর্তী যাত্রাবিষয়ক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, সাত দিনের ফিরতি ট্রেনের টিকিট নির্ধারিত দিনে বিক্রি হচ্ছে। এর তালিকাটি নিচে তুলে ধরা হলো:
৯ জুনের টিকিট: বিক্রি হয়েছে ৩০ মে
১০ জুনের টিকিট: বিক্রি হচ্ছে ৩১ মে
১১ জুনের টিকিট: বিক্রি হবে ১ জুন
১২ জুনের টিকিট: বিক্রি হবে ২ জুন
১৩ জুনের টিকিট: বিক্রি হবে ৩ জুন
১৪ জুনের টিকিট: বিক্রি হবে ৪ জুন
১৫ জুনের টিকিট: বিক্রি হবে ৫ জুন
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফিরতি যাত্রার এই বিশেষ ট্রেনের টিকিট কিনে কেউ চাইলে তা ফেরত দিতে পারবেন না। অর্থাৎ এই টিকিট অ-ফেরতযোগ্য। পাশাপাশি, প্রতিটি জাতীয় পরিচয়পত্র বা NID ব্যবহার করে একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪টি আসনের টিকিট একসঙ্গে কিনতে পারবেন। একাধিক টিকিট কেনার ক্ষেত্রে প্রতিটি সহযাত্রীর পূর্ণাঙ্গ নাম দিতে হবে টিকিট ক্রয়ের সময়।
ফিরতি যাত্রায় যাত্রীদের স্বস্তি দিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে এ বছর অতিরিক্ত স্পেশাল ট্রেন চালু করেছে, যেগুলো শুধুমাত্র ঈদের সময় কার্যকর থাকবে। এসব ট্রেন চলবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীমুখী রুটে। বিশেষ ট্রেনগুলোর সময়সূচি ও টিকিট প্রাপ্যতা সম্পর্কিত তথ্য রেলওয়ের railway.gov.bd ওয়েবসাইটে এবং Rail Sheba অ্যাপে পাওয়া যাবে।
রেলওয়ের টিকিট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান Shohoz-Synesis-Vincen JV পরিচালিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টিকিট কেনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইট ছাড়াও মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে যাত্রীরা সহজেই তাদের পছন্দের ট্রেন ও আসন নির্বাচন করতে পারছেন। ঈদের সময় সার্ভার সমস্যা যেন না হয়, সেজন্য প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদ-পরবর্তী ব্যস্ততম যাত্রাপথে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সেবার মান নিশ্চিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী, চেকিং দল এবং ট্রেন পরিচালন কর্মী মোতায়েন থাকবে। স্টেশনগুলোতে থাকবে সহায়ক তথ্যকেন্দ্র ও হেল্প ডেস্ক।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ঈদের সময় ট্রেনই এখনো সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গণপরিবহন হিসেবে বিবেচিত হয় দেশের সাধারণ মানুষের কাছে। একদিকে ট্রাফিক জ্যাম বা সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেই, অন্যদিকে নিরাপদ ও তুলনামূলক সাশ্রয়ী ভাড়ায় দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়া যায়—এই কারণে ঈদযাত্রা ও ফিরতি যাত্রায় রেলপথের চাহিদা সর্বাধিক।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের পরামর্শ দিয়েছে, নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট সময়ে টিকিট কেনার জন্য প্রস্তুত থাকতে। হঠাৎ ভিড় বা অনলাইনে চাপের কারণে বিভ্রান্তি এড়াতে যাত্রীদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ