
ছবি: সংগৃহীত
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী এই ভূমিকম্পে হঠাৎ কেঁপে ওঠে বহুতল ভবন, অফিস-আদালত, শপিংমল ও বাসাবাড়ি। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে ঢাকায় বহুতল ভবনে অবস্থানরত অনেকে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসেন। ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর অনেক জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্কেও সাময়িকভাবে সমস্যার কথা জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ঢাকার গুলশান, বনানী, মতিঝিল, ধানমন্ডি, উত্তরা, মিরপুর, বাড্ডা ও পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পটি বেশ জোরালোভাবে অনুভূত হয়। রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনাতেও মানুষ এই কম্পন অনুভব করেছেন। বিশেষ করে সিলেট ও চট্টগ্রামে কাঁপন তুলনামূলক বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের বাসিন্দারা দৌড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। বহুতল ভবনে লিফট ব্যবহারকারীরা হঠাৎ করেই মাঝপথে আটকা পড়েন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানান, তারা জীবনে প্রথম এত শক্তিশালী কাঁপুনি অনুভব করেছেন।
প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল দেশের বাইরে কোনো পার্শ্ববর্তী এলাকায় হতে পারে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা কত ছিল এবং কেন্দ্র কোথায় ছিল তা যাচাই-বাছাই করে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন জায়গায় ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরার খবর পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে হঠাৎ ভবন থেকে বেরিয়ে আসা অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বরং মাথা ঠান্ডা রেখে মজবুত আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নেওয়া কিংবা খোলা জায়গায় সরে যাওয়া উত্তম। ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে ভবনগুলোতে ভূমিকম্প-সহনশীল নকশা নিশ্চিত করার বিষয়েও জোর দেন তারা।
ভূমিকম্পের এই অভিজ্ঞতায় রাজধানীবাসীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ আবারও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে বারবার মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠার পর এবার তুলনামূলকভাবে বেশি শক্তিশালী কাঁপুনি সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে ভয় জাগিয়েছে।
সরকারি বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি জরুরি সহায়তা দেওয়ার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ