রিয়াজ উদ্দিন। বাংলা বার্তা
চারপাশ ঘন কুয়াশায় মোড়ানো। এক হাত দূরের মানুষকেও স্পষ্ট দেখা যায় না। দিনের এখন কয়টা বাজে তা হাতের ঘড়ি ছাড়া প্রকৃতি দেখে আন্দাজ করা একেবারেই দুঃসাধ্য ব্যাপার। ঠিক এই মুহুর্তে যদি কেউ আপনাকে এক গ্লাস খেজুরের রস হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে ঘন কুয়াশা মোড়ানো দিনে স্বাদ নিন খেজুরের রসের।
নিজের খেজুরের রস খাওয়ার মধুর অনুভূতির কথা বাংলা বার্তাকে জানিয়েছেন অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন।
রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। ভ্রমণ আমার নেশা বললে ভুল হবে না। কাজের ফাঁকে যখনি আমি সময় পাই আমার প্রিয় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়। তবে এবার শীতে আমার খেজুরের রস খাওয়ার নতুন এক অভিজ্ঞতা হল।
দিনটি ছিল ঘন কুয়াশায় মোড়ানো, মনের ভেতর উকি দিলো এই মুহূর্তে এক গ্লাস খেজুরের রস খাওয়ার। ছুটির দিন থাকায় তাৎক্ষণিক আমি আমার কাছের ৩/৪ জন বন্ধুকে ফোন দিয়ে মনের অনুভূতির বিষয়টি জানালে তারাও খেজুরের রসের স্বাদ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলে তাদেরকে নিয়ে বের হলাম খেজুরের রসের সন্ধানে।
প্রথমে গিয়েছিলাম ঢাকার ৩০০ ফিট নামক স্থানে। সেখানে খেজুরের রস না পাওয়ায় ৩০০ ফিটে এক দোকানদারের কাছ থেকে জানতে পারলাম ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের ভবানীপুরে রস পাওয়া যাবে। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এবার ছুটে চললাম ভবানীপুরে খেজুরের রস খাওয়ার উদ্দেশে। যখন আমরা সেখানে উপস্থিত হয় তখন ঘড়ির কাটায় বাজে ভোর ৫টা। তখনও চারপাশ অন্ধকার ও ঘন কুয়াশায় মোড়ানো।
প্রথমে ঐ গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সুমন মিয়ার কাছে ভালো খজুরের রসের সন্ধান জানতে চাইলে তিনি একটি খেজুরের বাগান দেখিয়ে বললেন এটা রহিম মিয়ার খেজুরের বাগান একটু পরেই সে এখানে এসে গাছ থেকে রস নামাবেন। আমরা তার কথা শুনে অপেক্ষা করতে থাকি।
একটু পরেই রহিম মিয়া বাগানের এসে গাছ থেকে রস নামাতে থাকে। রস নামানো শেষ হলে আমরা রসের কলসি থেকে গ্লাসে রস ঢেলে খাওয়া শুরু করি। ঘন কুয়াশার মধ্যে রসের গ্লাসে চুমুক দিতেই শরীরের মধ্যে কাঁপুনি শুরু হয়। একেতো তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও বাতাস বইছে। তবে সব কিছু উপেক্ষা করে খেজুরের রস যখন খেতে শুরু করি তখন মনের ভেতর এক স্বর্গীয় সুখ অনুভুত হয়েছে।
এভাবেই আমি ও আমার বন্ধুরা খেজুরের এক গ্লাস রস খেয়ে মধুর অনুভূতি নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা হলাম।