
ছবি: সংগৃহীত
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর, ভ্যাট, কাস্টমস ও অন্যান্য উৎস থেকে মোট ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। তবে এটি সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় সাড়ে ৬৬ হাজার কোটি টাকা কম। অর্থাৎ, এনবিআর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৮৩ দশমিক ১০ শতাংশই অর্জন করতে পেরেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে প্রকাশিত এক অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মে মাস পর্যন্ত কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের রাজস্ব আহরণ অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সভাপতিত্ব করেন। এতে কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কমিশনার, মহাপরিচালক ও সচিবরা ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সহকারী কমিশনার থেকে মহাপরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তা জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, অর্থবছরের শেষ সময়ে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর প্রতি সব বিভাগের একযোগে কাজ করা জরুরি। তিনি বিশেষভাবে টার্গেট ভিত্তিক রাজস্ব আদায়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বকেয়া আদায়ের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
তিনি আরও বলেন, অধিক রাজস্ব আদায় দেশের ঋণ কমানো এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। এজন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করাও একান্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। কিন্তু ১১ মাস শেষে এনবিআর ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। এ হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার থেকে প্রায় ৬৬ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে রাজস্ব আদায়।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এবার রাজস্ব আহরণে ৬ শতাংশের উন্নতি হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনও অনেক পথ বাকি।
রাজস্ব লক্ষ্য অর্জন করতে অর্থবছরের শেষ মাস জুনে প্রয়োজনীয় রাজস্ব আদায় হবে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। যা গত বছরের তুলনায় অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হিসেবে ধরা হচ্ছে।
রাজস্ব আদায়ে এমন বড় ঘাটতি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারকে বাজেট বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং দেশের ঋণ নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাকি সময়টাতে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তৎপর হতে হবে।
এছাড়াও বকেয়া আদায় দ্রুত শেষ করার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এতে করদাতাদের মধ্যে কর প্রণোদনা বৃদ্ধি ও নিয়মিত কর আদায়ের মাধ্যমে বাজেটের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা একযোগে কাজ করে বাকি মাসগুলোতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছেন। চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে বিশেষ পরিকল্পনা ও মনিটরিং বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় রাজস্ব আদায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তাই এ বিষয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা ও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখার উপর জোর দেয়া হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ