
ছবি: সংগৃহীত
গোপালগঞ্জ জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কর্তৃক আয়োজন করা ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এই সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে জেলার বিভিন্ন স্থানে চারটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেগুলোতে মোট ৩ হাজার ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ রয়েছে।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেলা জুড়ে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে মোট ৩০৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনতা। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড়া এলাকায় গৃহীত একটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ৫৪ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং জানান, জেলার পাঁচটি থানার তথ্য অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃতদের সংখ্যা নিম্নরূপ: সদর থানায় মোট ৯২ জন (নতুন গ্রেপ্তার ৪৪), কাশিয়ানীতে ৭৭ জন (নতুন ৩৩), মুকসুদপুরে ৮৮ জন (নতুন ২২), টুঙ্গিপাড়ায় ২৭ জন (নতুন ১০) ও কোটালীপাড়ায় ২২ জন (নতুন ১০)।
এর আগে, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির একটি কর্মসূচির সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এই সহিংসতার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকশো আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে, জেলার বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর, আগুন লাগানো, সড়কে গাছ ফেলে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি এবং অন্য ধরনের সহিংসতা সংঘটিত হওয়ায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি এখন তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং ফের বিশৃঙ্খলা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরণের সহিংসতা দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন ও জনকল্যাণে বাধা সৃষ্টি করে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে মতবিনিময় ও দাবী উপস্থাপন করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও জানিয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতা পুনরাবৃত্তি না হয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ