
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক প্যানেলে আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। প্রায় তিন মাস ধরে একটি সদস্যের ঘাটতি নিয়ে কাজ করছে বর্তমান নির্বাচক কমিটি, তবে সেই শূন্যস্থান পূরণের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিগগিরই জাতীয় দলের জন্য নতুন একজন নির্বাচক নিয়োগ দেওয়া হবে। এই মুহূর্তে আলোচনায় রয়েছেন বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার। সবচেয়ে এগিয়ে আছেন নারী দলের বর্তমান নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ শিপন।
হান্নান সরকারের পদত্যাগ এবং পরবর্তী পরিস্থিতি
২০২4 সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করেই নির্বাচকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান সাবেক ক্রিকেটার হান্নান সরকার। প্রায় ৮ বছর ৮ মাস বিসিবির সঙ্গে নির্বাচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি মূলত বয়সভিত্তিক দলগুলোর দায়িত্বে ছিলেন, তবে পরবর্তীতে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলেও যুক্ত হন। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু এবং আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে তিনি জাতীয় দল গঠনে দায়িত্ব পালন করেন।
হান্নান সরকার নির্বাচকের পদ থেকে সরে যাওয়ার পর পেশাদার কোচিং ক্যারিয়ারে মনোযোগ দেন। তার কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছে দারুণভাবে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) এবারের মৌসুমে আবাহনী লিমিটেডের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। তার সাফল্য নতুন পথচলার জন্য আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে বলে মনে করছেন অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক।
নির্বাচক প্যানেলে ঘাটতি ও দায়িত্ব ভাগাভাগি
হান্নান সরকারের পদত্যাগের পর গত তিন মাস ধরে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল কার্যত দু’জন সদস্য নিয়েই চলেছে। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও তার সহযোগী আব্দুর রাজ্জাক মিলে এই পুরো সময় জাতীয় দল নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দুই সদস্যের এই নির্বাচক প্যানেল ব্যস্ত সময় পার করলেও বোর্ড বুঝতে পারছে, তিনজনের প্যানেল গঠন করাই বেশি কার্যকর ও পরিকল্পিত দল গঠনের জন্য জরুরি।
বিসিবির পরিকল্পনা এবং সম্ভাব্য নতুন মুখ
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম একান্ত আলাপে জানিয়েছেন, “আমরা খুব শিগগিরই একজন নতুন নির্বাচক যুক্ত করতে চাই। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই বোর্ডে আলোচনা হয়েছে।”
যদিও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নাম ঘোষণা করা হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ সূত্র এবং বোর্ড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কথায় ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে আলোচনায় বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটারের নাম আছে। এর মধ্যে নারী দলের বর্তমান নির্বাচক এবং সাবেক জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
শিপনের বোর্ডে কাজের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পারফরম্যান্সই তাকে এগিয়ে রাখছে বলে মত অনেকের। তিনি নারী দলের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ এবং খেলোয়াড় উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছেন, যা জাতীয় দলের নির্বাচক হিসেবে কাজ করার জন্য বড় প্লাস পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
নির্বাচক প্যানেলে নতুন সদস্য যুক্ত হলে দল নির্বাচন আরও সুসংগঠিত এবং পরিকল্পনামাফিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ ও ভবিষ্যৎ সিরিজ সামনে রেখে বিসিবি চাইছে যেন নির্বাচক কমিটি পূর্ণাঙ্গ থাকে এবং প্রতিটি খেলোয়াড় নির্বাচন ন্যায্য ও সুপরিকল্পিত হয়। তাই শিগগিরই এই পদে নতুন নিয়োগ নিয়ে বোর্ড থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা প্রবল।
বিসিবির এমন পদক্ষেপ ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য স্বস্তির খবর হতে পারে, কারণ একটি পরিপূর্ণ এবং কার্যকর নির্বাচক কমিটি যে কোনো সময় দল গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। নতুন নিয়োগের মাধ্যমে জাতীয় দলে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও পেশাদারিত্বের ছোঁয়া আসবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ