
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় পাকিস্তানের ফেডারেল বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান চার দিনের সরকারি সফরে বুধবার রাতেই পৌঁছেছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার।
পাকিস্তান হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় উন্নীত করা এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা। বিশেষ করে এই সফরকে কেন্দ্র করে বাণিজ্য বৃদ্ধি, নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সফরের চার দিনের সময়সূচিতে জাম কামাল খান বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন। এর মধ্যে রয়েছে: বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক, সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়, ব্যবসায়ী সংগঠন ও শিল্প সংস্থার নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা।
সূত্র জানিয়েছে, আলোচনার মূল অগ্রাধিকার হবে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সুযোগ বৃদ্ধি করা। এছাড়া নতুন বিনিয়োগ খাত চিহ্নিত করা, বিদ্যমান বাণিজ্যিক বাধা দূর করা এবং রপ্তানি-আমদানি ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও কার্যকর করা এই সফরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত বিষয়। এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশ নতুন সমঝোতার চুক্তি করতে পারে, যা শিল্প, কৃষি ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে আরও কার্যকর করার জন্য বাজার সম্প্রসারণ, ট্যারিফ সহজীকরণ এবং লগিস্টিক চ্যানেল উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পাকিস্তান হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাম কামাল খানের সফর দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ ও স্থিতিশীল করবে। তিনি বাংলাদেশে আসার আগে পাকিস্তানের বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক অগ্রগতি নিয়ে অভিজ্ঞতা ও ধারাবাহিক নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতারা এই সফরকে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের জন্য নতুন দিকনির্দেশনার সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এটি বিশেষভাবে নতুন বিনিয়োগ, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া, তারা আশাবাদী যে, সফরের আলোচনার ফলস্বরূপ দুই দেশের মধ্যে ট্রেড ফেয়ার, ব্যবসায়িক মিশন এবং প্রযুক্তি বিনিময় প্রোগ্রাম চালু করা হতে পারে। এতে বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো দ্বিপাক্ষিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা ওঠাপড়ার মধ্য দিয়ে এসেছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে প্রাধান্য দিয়ে সম্পর্ককে আরও সুরক্ষিত ও ফলপ্রসূ করার প্রচেষ্টা চলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জাম কামাল খানের এই সফর দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা, বন্ধুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক নীতি এবং বিনিয়োগ পরিবেশকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
সফরের শেষদিনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে, যা বাণিজ্য বৃদ্ধি, শিল্প ও কৃষি খাতের নতুন সুযোগ এবং ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সহায়ক হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ