
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপলক্ষে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময়ের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বছর ঈদের ছুটি গ্রীষ্মকালীন অবকাশের সঙ্গে মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য টানা ১৯ দিনের একটানা ছুটি দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, আগামী ১ জুন থেকে শুরু হবে ছুটি, যা চলবে ১৯ জুন পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে দেশের সরকারি, বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য ছুটির সময়সীমা একটু বেশি, যেখানে শিক্ষার্থীরা ৩ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ছুটির সুবিধা পাবেন।
এছাড়া দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোতে ঈদুল আজহার ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত। তবে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ আলাদাভাবে উল্লেখ না থাকলেও তা কার্যত ঈদের ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে একত্রে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, ছুটির মেয়াদ দীর্ঘ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ধীরগতি ঠেকাতে এবং শিক্ষা কার্যক্রমে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি শনিবার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ দুই দিন হলো ১৭ মে এবং ২৪ মে—যা সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে গণ্য হয়।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, “সরকার আগামী ১১ ও ১২ জুন—বুধবার ও বৃহস্পতিবার—ঈদুল আজহার নির্বাহী ছুটি ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে দাপ্তরিক কাজের স্বার্থে ১৭ মে ও ২৪ মে শনিবার অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনার আলোকে ঐ দুই শনিবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে।”
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, "এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হলো।"
উল্লেখ্য, ছুটির এই সময়কালে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসও বন্ধ থাকবে, তবে ১৭ ও ২৪ মে অফিস খোলা থাকবে এবং সেসব দিনে সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। একই নিয়ম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছুটির তালিকা অনুযায়ী নিজ নিজ একাডেমিক ক্যালেন্ডার পুনর্গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে করে ক্লাসে কোনো ধরনের শিক্ষাগত ঘাটতি না হয়। দীর্ঘ ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি যাতে না হয়, সেজন্য বিশেষ ক্লাস বা অতিরিক্ত পাঠদানের পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে।
অভিভাবক মহল এ ধরনের দীর্ঘ ছুটিকে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বস্তির জন্য উপযোগী মনে করলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ বিরতির পরে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ফেরাতে বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে শিক্ষক ও অভিভাবকদের। বিশেষ করে জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের উচ্চ তাপমাত্রার সময়ে একটানা ক্লাস চালাতে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই ছুটি সংক্রান্ত নোটিশ প্রকাশ করেছে এবং শিক্ষার্থীদের আগামী ১৭ ও ২৪ মে যথাসময়ে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে অভিভাবকদের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি দেখা দিলেও, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বলছে, এটি আগাম প্রস্তুতিরই একটি অংশ।
বাংলাবার্তা/এমএইচ