
ছবি: সংগৃহীত
দেশের রাজনীতিতে চলমান অস্থিরতা ও নানা দাবিদাওয়া ঘিরে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আজ সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ ও সমাবেশের মাধ্যমে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়তে থাকায় সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে বৈঠকের নির্দিষ্ট সময়, স্থান কিংবা আলোচ্য এজেন্ডা সম্পর্কে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা প্রেস বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং প্রশাসনিক মহলে এই বৈঠক নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল ও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত উত্তপ্ত। বিশেষ করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করার পর পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিচ্ছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দাবি ঘিরে ব্যাপক আলোচনার প্রেক্ষিতে সরকারও একপ্রকার চাপে পড়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের এই জরুরি বৈঠকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, প্রশাসনিক কৌশল এবং প্রতিবাদ কর্মসূচির মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বিশেষ করে, সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পরও যদি বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে, তাহলে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এ ছাড়া, সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিকভাবে এই জরুরি বৈঠকের ডাক আসায় ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি প্রতিক্রিয়াশীল এবং কৌশলগত বৈঠক। বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি, প্রশাসনের করণীয় ও রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ অবস্থান নিয়ে সুদূরপ্রসারী কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে।
এদিকে, প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে আলোচনা চলছে যে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি যদি জনপরিসরে আরও ব্যাপকতা লাভ করে কিংবা তা সহিংস রূপ ধারণ করে, তাহলে সরকারকে কী ধরনের রাজনৈতিক ও আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে—তা নিয়েও উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে মতবিনিময় হতে পারে। এ ছাড়া সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নির্ধারণে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও একাধিক অনানুষ্ঠানিক সূত্র বলছে, বৈঠকে অংশ নেবেন সরকারের শীর্ষ উপদেষ্টারা এবং নিরাপত্তা সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকতে পারেন। এতে করে বৈঠকের গুরুত্ব ও সম্ভাব্য ফলাফল ঘিরে জনমনে কৌতূহল আরও বাড়ছে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সাধারণত জাতীয় সংকট বা জরুরি পরিস্থিতিতে বৈঠকে বসে এবং সেখানেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তাই আজকের সন্ধ্যার এই বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘোষণা আসতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে প্রশাসনিক অঙ্গন পর্যন্ত অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ